শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি: বৃষ্টির আওয়াজ অনেকের মনে আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি করে। আর তার সঙ্গে যদি জঙ্গল লাগোয়া কোনও নির্জন রিসর্টের বারান্দায় বসে চায়ের স্বাদ নেওয়া যায় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সঙ্গে দুই চোখ ভরে দেখা যাবে সবুজের সমারোহ। বর্ষায় ডুয়ার্সের (Dooars) জঙ্গল একদিকে যেমন আরও সবুজ হয়ে ওঠে, তেমনি পাহাড়ি খরস্রোতা মূর্তি, ডায়না, নেওড়া হয়ে ওঠে আরও চঞ্চলা। বর্ষায় ওই নদীগুলো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে কয়েকগুণ। বর্ষার এই সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়েই এবার পর্যটনের প্রসারে উদ্যোগী হয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
জঙ্গলকেন্দ্রিক ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা। তবে ১৬ জুন থেকে তিন মাসের জন্য পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ হচ্ছে গরুমারা, জলদাপাড়া সহ উত্তরবঙ্গের সমস্ত বনাঞ্চলে। তাই বলে কি ঝাঁপ বন্ধ হবে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসার? বিকল্প হিসেবে বর্ষার মরশুমকে কাজে লাগিয়ে ‘বর্ষায় বনবাস’ ট্যাগলাইন চালু করেই ডুয়ার্সে বর্ষার অপরূপ সৌন্দর্যকে তুলে ধরা হচ্ছে এবার। তার সঙ্গে জঙ্গলের মাঝের বিভিন্ন সড়কে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে এই প্যাকেজে। সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় ওই নতুন প্যাকেজের প্রচার করে বর্ষার মরশুমে বাজিমাত করতে কোনও খামতি রাখছে না পর্যটন ব্যবসায়ী মহল।
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু দেব বলেন, ‘বন্যপ্রাণীদের প্রজনন ঋতুর জন্য জঙ্গলে প্রবেশ বর্ষার তিনমাস বন্ধ থাকে। তবে জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যে বিভিন্ন রাস্তা রয়েছে সেখানেও হামেশাই বন্যপ্রাণীর দেখা মেলে। এই প্যাকেজে সেই সমস্ত রাস্তাকেও পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য রাখা হয়েছে।’
ঠিক কী কী থাকছে ওই প্যাকেজে? গরুমারা ও লাটাগুড়ির জঙ্গলের মাঝের রাস্তা, লাটাগুড়ির জঙ্গল লাগোয়া ছাওয়াফুলি যাওয়ার রাস্তা এমনকি চাপড়ামারি যাওয়ার রাস্তায় পর্যটকদের ঘোরার ব্যবস্থাও থাকছে। পাশাপাশি বাড়তি পাওনা হিসেবে চা ফ্যাক্টরিতে চা পাতা তৈরি দেখারও সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। আগামীদিনে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এই প্যাকেজ বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক অনুপ গোপের কথায়, ‘বিভিন্ন পর্যটনমেলায় এই প্যাকেজের প্রচার চলছে। ন্যায্য অর্থের বিনিময়ে নতুন এই প্যাকেজের বুকিং সম্পর্কিত খোঁজ নেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন পর্যটকরা।’