কল্লোল মজুমদার, মালদা: মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে একটি হোটেলের অফ শপে তখন রীতিমতো মারামারি। থিকথিকে ভিড়। এই বুঝি ভেঙে পড়ল দোকানের সিঁড়ি। যে যার মতো চিৎকার করে চলেছে, ‘দাদা দুটো ফুল দিন।’ কেউবা চিৎকার করে চলেছেন, ‘দাদা অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। আমাকে চারটে হাফ আর দুটো ফুল।’ শুধু একটি দোকানেই নয়, জেলার প্রায় দেড়শো অফ শপে দুদিন ধরে একই চিত্র।
দোল, হোলি বলে কথা। তারমধ্যে শুক্র ও শনিবার ছিল ‘হাফ ড্রাই ডে।’ তাই হুড়োহুড়িও ছিল অনেক বেশি। ব্যবসায়ীদের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারিভাবে গত দুদিনে ১০ কোটি টাকারও বেশি মদ বিক্রি হয়েছে মালদা জেলায়। আর বেসরকারি হিসেবে ধরলে, পরিমাণটা ১০ কোটি ছুঁইছুঁই।
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ জেলা সভাপতি উজ্জ্বল সাহার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালদা জেলায় কমবেশি ১৫০টি অফ শপ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দুদিনে জেলায় দশ কোটি টাকারও বেশি মদ বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় দু কোটি টাকা কম।’
জেলার মদ ব্যবসায়ীদের মতে, কম বিক্রির কারণ মুসলিম সম্প্রদায়ের রোজা। এই সময়টা তাঁরা মদ স্পর্শ করেন না। উজ্জ্বল সাহা আরও জানিয়েছেন, ‘সাধারণ দিনে মালদা জেলায় প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়।’
একটি সূত্র জানাচ্ছে, দোলের সময় এই বিক্রি শুধুমাত্র সরকারি অফ শপগুলির হিসেব মাত্র। এই সময়টা জেলার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে এবং পাড়ায় পাড়ায় পানের দোকান, মুদিখানা এবং কিছু বাড়ি থেকেও মদ বিক্রি হয় বেশি দামে। দোলের সময় অতিরিক্ত আয়ের আশায় দোকানগুলি এবং বাড়িতে আগে থেকেই মদ কিনে মজুত করে রাখা হয়। আর ওই সময়ে সেই মদ অতিরিক্ত দামে স্থানীয় মানুষের কাছে বিক্রি করে দেন মজুতকারীরা। সেই হিসাবটা ধরলে দুদিনে মদ বিক্রির পরিমাণ ১৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
মালদার একটি অফ শপের মালিক দেবু সাহার কথায়, ‘নিয়ম মেনে শুক্রবার ও শনিবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলার সমস্ত মদের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবুও ভালো বিক্রি হয়েছে। সাধারণ দিনের তুলনায় ১০ গুণ বেশি।’