ধূপগুড়ি: মুখ্যমন্ত্রীর জলপাইগুড়ি সফরের দিন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও দলীয় পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে পোষ্টার পড়ল। মাগুরমারি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝুমুর, চৌরঙ্গি সহ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় হাতে লেখা ওই পোষ্টারগুলি টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে গ্রামবাসীরাই প্রথম ওই পোষ্টার দেখতে পান। পোষ্টারে লেখা কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নের ১৫ এফএফসি ফান্ডের ২৩-২৪,২৪-২৫ অর্থবর্ষের ২৫ লক্ষ টাকা কোথায় গেল এবং এই টাকা প্রধান সীমা রায় ও তপন সরকার আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। একইসঙ্গে সিবিআই তদন্ত এবং এদের গ্রেপ্তারের দাবীও তোলা হয়েছে। সকাল থেকেই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়েও একই পোষ্টার টাঙানো হয়েছে। আর সেটা রাতের অন্ধকারেই হয়েছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে কে কার্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়ল,তা নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে।
এই ঘটনায় প্রধান সীমা রায় বিজেপির চক্রান্ত বলে দাবী করেছেন। একইসঙ্গে সরাসরি না বললেও দলীয় অন্তর্ঘাতের বিষয়টিও উড়িয়ে দেয় নি প্রধান। তিনি বলেন, বিজেপি চক্রান্ত করে এইসমস্ত কাজ করেছে। আর গ্রাম পঞ্চায়েতে খুব সামান্য টাকাই কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন থেকে এসেছে। আত্মসাতের প্রসঙ্গ আসলে গ্রাম উন্নয়ন কিভাবে হল। আর দলীয় অন্তর্ঘাত নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রধানের দাবী, কে পোষ্টার লাগিয়েছে তা দেখিনি, দেখলে বলতে পারতাম।নিজেদের দলের অন্তর্ঘাত কিনা যাচাই না করে বিজেপির নামে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে বলেও দাবী করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে পোষ্টার যখন পড়েছে,তখন তদন্তের দাবীও তুলেছে বিজেপু নেতৃত্ব। বিজেপির পশ্চিম মন্ডলের সভাপতি পলাশ বসাক জানালেন, কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের জন্যে যে টাকা পাঠাচ্ছে,তা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান ও অঞ্চল সভাপতি সহ নেতারা আত্মসাৎ করছে। সাধারন মানুষের কোনও উন্নয়নের কাজে ওই টাকা খরচ করা হচ্ছে। এর আগেও ধূপগুড়ির বিডিও এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে মাগুরমারি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু আজও তার কোনও সুরাহা হয় নি। উলটো বহাল তবিয়তে দুর্নীতির কাজ কর্ম চলছে।
এদিন সকালে পোষ্টার গুলি টাঙানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের ধূপগুড়ি গ্রামীন কমিটির ব্লক সভাপতি মলয় রায়, মাগুরমারি ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের যুব সভাপতি নূর আলমরা ঘটনাস্থলে যায়। মলয় রায় ঘটনায় কিছু জানে না এবং খোজ নিয়ে দেখবেন বলেই জানিয়েছেন। তবে যুব সভাপতি নূর আলম জানায়, মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে আসতেই বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলে চক্রান্ত করতেই পোষ্টার লাগিয়েছে। সম্পূর্ন ভিত্তিহীন অভিযোগ। পোষ্টার লাগানো নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় অন্তর্ঘাত কিনা প্রশ্ন করতেই নূর আমল স্পষ্ট দাবী করেন, নোংরা রাজনীতি তৃণমূল কংগ্রেস করে না।বিজেপি রাতের অন্ধকারে পোষ্টার লাগিয়েছে এবং কর্মকান্ড ঢাকতে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম দিচ্ছে।
রিপোর্টার: শুভাশিস বসাক, ধূপগুড়ি