ডালখোলা: বেসরকারি আবাসিক স্কুলের হস্টেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল ডালখোলায়। মৃত ছাত্রের নাম মহম্মদ আসরাফ (১৪)। বাড়ি ইসলামপুর শহরের চোসিয়া এলাকায়। ছেলের আকস্মিক মৃত্যুর জন্য গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্কুল কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার। ডালখোলা থানায় পরিবারের তরফে এই মর্মে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের পালটা দাবি, ওই ছাত্রের শারীরিক সমস্যার কথা গোপন রেখেই স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন অভিভাবকরা।
ইসলামপুরের চোসিয়া এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ নাইম তাঁর ছোট ছেলে মহম্মদ আসরাফকে ভালো পড়াশোনা করানোর লক্ষ্যে ডালখোলা থানার রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করান। হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা চলছিল আসরাফের। শবেবরাত উপলক্ষ্যে স্কুল ছুটি থাকায় চলতি মাসের ১০ তারিখে বাড়িও যায় আসরাফ। এরপর ১৬ তারিখে সে হস্টেলে ফিরে আসে। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু শনিবার রাতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে আসরাফ। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে প্রথমে করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পাশাপাশি তার অসুস্থতার কথা আসরাফের বাবাকে ফোন করে জানানো হয়। এদিকে আসরাফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আসরাফকে করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় কিশানগঞ্জ মেডিকেল কলেজে। সেখানকার চিকিৎসকরা অন্যত্র নিয়ে যেতে বলায় পরিবারের লোকজন তাকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানেই চিকিৎসকরা আসরাফকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
যদিও ওই স্কুলের চেয়ারম্যান মহম্মদ আব্বাসউদ্দিনের সাফাই, আমাদের কোনও গাফিলতি নেই। ঘটনার পর ছাত্রাবাসের ওই ঘরে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, পড়াশোনার পর ছেলেটি তার বিছানায় কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে পড়ে। তারপর হঠাৎই সে ঘুম থেকে উঠে বমি করতে থাকে। অসুস্থতার কথা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের ধারণা, আগে থেকেই আসরাফের শরীরে কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল, যা তার পরিবারের লোকজন স্কুলে ভর্তির সময় গোপন করেছে। তবে ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসবে।’
মৃত ছাত্রের বাবা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রবিবার ডালখোলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছেলের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যদিও পুরো ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ।