বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, কুমারগঞ্জ: দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) কুমারগঞ্জ (Kumarganj) ব্লকের মোহনা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভগবতীপুরের বাঁশপাড়া স্বাধীনতার ৭৫ বছরের পরেও উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। মাত্র ১৫০ মিটার কাঁচা রাস্তা বছরের পর বছর ধরে তৈরি হয়নি। বর্ষার জল আর কাদা মিলে এই রাস্তাটিকে এখন বাসিন্দাদের কাছে নরক করে তুলেছে। প্রায় একহাঁটু কাদার মধ্য দিয়ে রাস্তা পেরোতে হচ্ছে গ্রামের শতাধিক বাসিন্দাকে।
গ্রামবাসীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, বছরের এই সময়ে যখন বর্ষার প্রকোপ চরমে, তখন ওই রাস্তা কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। অনুষ্ঠান বা সামাজিক জমায়েতের কথা ভাবাও যায় না। গ্রামের বাসিন্দা পরেশ বর্মন, অসিত মণ্ডল, বিপুল মণ্ডল, শাখাবলা মণ্ডল, নমিতা মণ্ডল এবং বরুণ মণ্ডল জানিয়েছেন, এখনও কংক্রিটের রাস্তার মুখ দেখেননি।
প্রতি বর্ষাতেই কাদাজল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তাঁদের আক্ষেপ, আত্মীয়স্বজন এই সময়ে বাড়িতে আসতে চান না, আর এই অবস্থায় বিয়ে বা যে কোনও অনুষ্ঠান করাও প্রায় অসম্ভব। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে হয়। ছেলেমেয়েরাও স্কুলে যেতে চায় না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। বারবার আশ্বাস পাওয়া গেলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। যদিও এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিপ্লব মুর্মু বলেন, ‘আমার আগের মেম্বারের সময় ওই রাস্তাটি ঢালাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে কাজ শুরু হয়নি। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সুনীল সরকার।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এখন গ্রামের মানুষের মনে জমে উঠেছে ক্ষোভ। তাঁরা জানিয়েছেন, আগামীদিনে যদি ওই রাস্তায় কংক্রিটের কাজ না হয়, তাহলে তাঁরা ভোট বয়কটের পথে হাঁটবেন। প্রশাসনের কাছ থেকে অনেক প্রতিশ্রুতি মিললেও বাস্তব ছবি বদলায়নি। স্বাধীনতার আট দশক চলছে, অথচ এখনও প্রাথমিক পরিকাঠামোর এই করুণ অবস্থা নিঃসন্দেহে প্রশ্ন তোলে। উন্নয়নের আলো আদৌ পৌঁছেছে তো এইসব প্রান্তিক মানুষজনের জীবনে? বাঁশপাড়ার বাসিন্দারা এখনও সেই আলো দেখার অপেক্ষায়।