সৌরভ রায়, হরিরামপুর: বাংলা আবাস যোজনায় দরিদ্রদের কাছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সৈয়দপুর পঞ্চায়েতের মোবারকপুর কানাইপুর গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) হরিরামপুরের (Harirampur) বিডিও অত্রী চক্রবর্তী এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রেমচাঁদ নুনিয়া।
লিখিত অভিযোগে মোবারকপুর কানাইপুর গ্রামের চন্দ্র দেবশর্মা, হরি সরকার, অনন্ত সরকার, অমূল্য দেশি সহ দশজন দরিদ্রের অভিযোগ, বাংলা আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এসেছে। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরের কাজও শুরু হয়েছে। এরপর পঞ্চায়েত সদস্য অঞ্জলি সরকার ও তাঁর স্বামী তাপস সরকার পাঁচ হাজার টাকা করে তাঁদের দিতে হবে বলে বাড়ি এসে জানিয়ে যান। অভিযোগ, সময়ের মধ্যে টাকা না দিলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পঞ্চায়েত সদস্য আটকে দেবেন বলে হুমকিও দিয়ে যান।
অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য অঞ্জলি সরকার হলেও সিদ্ধান্ত নেন তাঁর স্বামী তাপস সরকার। অনেকেই পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার ভয়ে গোপনে টাকা দিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি লিখিত অভিযোগকারীদের। প্রথম কিস্তির ষাট হাজার টাকার মধ্যে থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিলে সেই টাকায় বাড়ির কাজ অনেকটাই পিছিয়ে যাবে। এসত্ত্বেও খানিকটা সাহস নিয়েই সোমবার দুপুরে হরিরামপুর ব্লকের বিডিও এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগে নিজেদের অসহায়তার কথা উল্লেখ করেন জিনো সরকার, ভারতী সরকাররাও। তঁাদের দাবি, প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। জিনিসপত্রের যা দাম, তাতে সেই টাকা দিয়ে ঘরের ভিত্তি তৈরি করাটাও খুব সমস্যার। তার মধ্যেও যদি ৫ হাজার টাকা দিয়ে দিতে হয়, তবে ঘর কীভাবে করব। আমরা চাই, আমাদের সমস্যার কথা বিবেচনা করা হোক।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অঞ্জলি সরকার ও তাঁর স্বামী তাপস সরকার। পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর দাবি, ‘আমার ও স্ত্রীর নামে পরিকল্পনা মাফিক বদনাম করবার চেষ্টা করছেন কিছু মানুষ।’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রেমচাঁদ নুনিয়ার বক্তব্য, ‘এই ধরনের অভিযোগ কখনই মেনে নেওয়া যায় না। লিখিত অভিযোগ হাতে পাওয়ার পর আমি স্তম্ভিত। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করব।’ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও অত্রী চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘টাকা দেওয়া ও নেওয়া দুটোই অপরাধ। ঘটনার তদন্ত হবে।’