Dakshin Dinajpur | অবহেলায় টেরাকোটার ঐতিহ্যবাহী মন্দিরবাসিনী মন্দির

Dakshin Dinajpur | অবহেলায় টেরাকোটার ঐতিহ্যবাহী মন্দিরবাসিনী মন্দির

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


রাজু হালদার, তপন: দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) তপন (Tapan) ব্লকের ভিকাহারের মন্দিরবাসিনী মন্দিরটি বহুপ্রাচীন। ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটার কারুকার্য রয়েছে মন্দিরজুড়ে। কত জানা-অজানা ইতিহাসের সাক্ষী। তবে বর্তমানে সেই ইতিহাস প্রায় অবক্ষয়ের মুখে। দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে মন্দিরটির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তার সঙ্গে মন্দির সংলগ্ন প্রাচীন একটি গাছ এবং জঙ্গল ঐতিহ্যবাহী মন্দিরটিকে কার্যত গ্রাস করে ফেলেছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ভগ্নপ্রায় মন্দিরটি সংরক্ষণ ও সংস্কার করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে সেটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। পাশাপাশি ইতিহাসবিদরা মন্দির সংরক্ষণের জন্য রাজ্য হেরিটেজ কমিশনকে উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবিও জানিয়েছেন। এই বিষয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দা শিবেশ হাজরা বলেন, ‘ভিকাহারের মন্দিরবাসিনী মন্দির খুবই প্রাচীন। তবে আমরা ছোটবেলা থেকে মন্দিরটিকে এই অবস্থাতেই দেখছি। তাই তা দ্রুত সংরক্ষণ ও সংস্কার করা অত্যন্ত প্রয়োজন।’

তিনি আরও জানান, এখানকার দেবী ভীষণ জাগ্রত। আজও নিয়ম মেনে দীপান্বিতা অমাবস্যায় পুজো করা হয়। একদিনে দেবীমূর্তি গড়ে পুজো করে ভোর হওয়ার আগে সেই মূর্তি বিসর্জনও দেওয়া হয়। স্থানীয় একটি পুকুরের লিজের টাকায় মন্দিরে পুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবার। দিনাজপুরের রাজা রমানাথ রায় ১৭০০ শতকের শেষে টেরাকোটার মন্দিরটি স্থাপনা করেন। মন্দিরের উপরিভাগ গম্বুজাকৃতি ও খিলানযুক্ত। এছাড়া মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন নকশা কাটা রয়েছে। এমনকি প্রাচীন মন্দিরটিকে ঘিরে নানা কিংবদন্তিও রয়েছে। একসময় কোনও এক তান্ত্রিক নাকি ওই মন্দিরে তন্ত্র সাধনা করতেন। তিনি সিদ্ধিলাভ করার জন্য একটি মেয়েকে মন্দির বেদির জায়গায় গর্ত করে সমাহিত করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে এই মন্দিরে নিয়মিত পুজো হলেও এখন কেবল দীপান্বিতা অমাবস্যায় ঘটা করে বামাকালীর পুজো হয়। সারাবছর মন্দিরটি বিগ্রহহীন থাকলেও পুজোর দিনে দেবী মূর্তি নির্মাণ করে প্রথা মেনে মশালের আলোয় পুজো অনুষ্ঠিত হয়।

আগে মন্দিরটিতে মহিলাদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও এখন তাঁরা পুজোয় অংশ নেন। এই বিষয়ে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন মণ্ডল বলেন, ‘পরম্পরা মেনে আজও মন্দিরে স্থানীয় বাসিন্দা সহ জেলার অনেক মানুষ পুজো দেন বা মানত করেন। এই মন্দিরের সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় আবেগ জড়িত। প্রাচীন এই মন্দিরটি জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

ইতিহাস গবেষক ডঃ সমীত ঘোষের কথায়, ‘দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রাচীন টেরাকোটার মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম ভিকাহারের মন্দিরবাসিনী মন্দির। সেটি প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের পুরোনো। টেরাকোটা ও দেউলের উপর যাঁরা গবেষণা করতে চান, তাঁদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান। তবে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের অভাবে মন্দিরটি এখন ধ্বংসের পথে। এবিষয়ে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের পক্ষ থেকে মন্দিরটিকে মর্যাদার সঙ্গে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *