নয়ারহাট: রান্নার দায়িত্বে থাকা দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর রেষারেষিতে মিড-ডে মিল রান্না বন্ধ হয়ে গেল মাথাভাঙ্গা হাই মাদ্রাসায়। মঙ্গলবার রান্না হলেও পড়ুয়াদের পাতে তা পড়েনি। বুধবার আবার রান্নার কাজই বন্ধ ছিল। ফলে পরপর দু’দিন না খেয়েই শুকনো মুখে বাড়ি ফিরতে হল পড়ুয়াদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝামেলার জেরে রান্না বন্ধের খবরে এলাকায় শোরগোল পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবদুল বাতেন আলিকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন না ধরায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে মাথাভাঙ্গা-১’র বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদ্রাসায় পালা করে রান্না করে আসছে ‘সুলতানা রাজিয়া’ এবং ‘প্রজাপতি’ নামে স্থানীয় দুটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ কারণে ‘সুলতানা রাজিয়া’ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে মাসতিনেক আগে রান্নার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে মাদ্রাসায় রান্না করছেন ‘প্রজাপতি’ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।
কিন্তু মঙ্গলবার হঠাৎ ‘সুলতানা রাজিয়া’ গোষ্ঠীর সদস্যরা এসে রান্নার কাজ শুরু করে দেন। ‘প্রজাপতি’ গোষ্ঠীর সদস্যরা মাদ্রাসায় এসেও ঠায় বসে থেকে ফিরে যান। রান্না হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে মিড-ডে মিল বিতরণ করা হয়নি পড়ুয়াদের। ফলে না খেয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের। বুধবারও দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। কিন্তু কোনও গোষ্ঠীর সদস্যই রান্না করেননি। ফলে পরপর দু’দিন পড়ুয়ারা মিড-ডে মিল থেকে বঞ্চিত হল। অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়ার কথায়, ‘দু’দিন ধরে মিড-ডে মিল খেতে পারছি না।’
এদিন মাদ্রাসায় গিয়ে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সুলতানা রাজিয়া গোষ্ঠীর কর্ণধার মিনুকা বিবির বক্তব্য, ‘দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। প্রধান শিক্ষকের কথামতোই মঙ্গলবার আমরা মিড-ডে মিল রান্না করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের একাংশের আপত্তিতে খাবার বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।’ বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের নজরে আনা হয়েছে বলে জানান ‘প্রজাপতি’ গোষ্ঠীর কর্ণধার দুর্গা বর্মন। তাঁর বক্তব্য, ‘মঙ্গলবার ওই গোষ্ঠীর সদস্যরা আগেভাগে এসেই রান্না শুরু করে দিয়েছিলেন। এদিনও গিয়ে দেখি ওরা রান্নাঘরের দরজার সামনে বসে আছেন। অশান্তি এড়াতে আমরা বাড়ি চলে আসি।’
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদক কাজি সাজিদা খানম জানালেন, মিড-ডে মিল রান্না নিয়ে গণ্ডগোলের বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলে তাঁর আশা। একই আশ্বাস দিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজিবুল হাসান।