কোচবিহার: বাংলার বাইরে বাঙালি ও বাংলাভাষীরা অত্যাচারিত হলে এরাজ্যে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের ঘেরাও করে উপযুক্ত জবাব চাওয়ার নিদান দিলেন কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার কোচবিহারের রবীন্দ্র ভবনে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা হয়। সেখানেই জগদীশ এমন মন্তব্য করেন। যেটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। টিএমসিপি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়নদীপ গোস্বামী ও জেলা সভাপতি অনির্বাণ সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মন ও প্রবীণ নেতা আবদুল জলিল আহমেদ সহ অন্য নেতা-নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে জগদীশ বলেন, ‘আমাদের শুধু ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে চলতে হবে। এই বাংলার মানুষের উপর, বাংলাভাষী মানুষদের উপর বিজেপি যাতে অত্যাচার করার সাহস না পায়। বাংলার বাইরে ভারতের মধ্যে কোথাও যদি বাঙালিদের বেশি হেনস্তা করা হয়, তাহলে গেরুয়া শিবিরের বাংলার মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও নেতাদের ঘেরাও করা হবে।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের জেলায় বিজেপির ছয়জন বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে এক কিলোমিটার রাস্তা তাঁরা করতে পারেননি। প্রত্যেক বিধায়কের বাড়ি ঘেরাও করে তাঁদের কাজের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলা হবে।’
এদিকে, এদিনের সভায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ২৮ অগাস্ট কোচবিহার থেকে কলকাতায় ৬ হাজার লোক নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন। পাশাপাশি কলেজ নির্বাচন নিয়ে সদস্যদের প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন। কলেজ নির্বাচন এবছর হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষ্যে অভিজ্ঞতা আছে এমন সিনিয়ার নেতাদের কলেজের টিএমসিপি নেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও বলেন। আবদুল জলিল আহমেদের কথায়, ‘বিজেপি শুধু রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা বলে। তাদের যদি ক্ষমতা থাকে একটা ধরে এনে দেখাক।’ শহরের মধ্যে এই সভা হলেও তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় সহ রবি অনুগামীদের কাউকে দেখা যায়নি।
এদিন বেলা ১২টা থেকে সভা থাকলেও তৃণাঙ্কুর বিকাল চারটের পরে মঞ্চে ওঠেন। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করে ঘাসফুল শিবিরের প্রচুর সদস্য সভা ছেড়ে চলে যান। এতে রবীন্দ্র ভবনে প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা হয়ে যায়। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসুর বক্তব্য, ‘শাসকদলের পায়ের নীচের মাটি সরে গিয়েছে। দুর্নীতিতে ওরা আপাদমস্তক ডুবে গিয়েছে। ওদের পক্ষে নির্বাচনে জেতা কোনওভাবে সম্ভব নয় তা ওরা বুঝতে পেরেছে। তাই এসব পাগলের প্রলাপ বকছে।’