Cooch Behar | পোলোর ‘প্রথা’ এখনও টিকে রবির হাতে! কীভাবে?

Cooch Behar | পোলোর ‘প্রথা’ এখনও টিকে রবির হাতে! কীভাবে?

শিক্ষা
Spread the love


হলদিবাড়ি: একসময় খালবিল, জলাশয় বা পুকুরের কম জলে আট থেকে আশি পোলো বা ঝকা নিয়ে ছোট মাছ ধরতে নামতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই প্রথা। বিপুল পরিমাণে মাছ ধরার আশায় কেউই আর তেমন পোলো ব্যবহার করেন না। অধিকাংশই হাত বাড়িয়েছেন জালের দিকে। তবে আগের মতো না হলেও, এখনো পোলো দিয়ে মাছ ধরেন কেউ কেউ। সেই পোলো তৈরি করেই বাড়তি উপার্জন করছেন দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতমুখা এলাকার প্যান্ডেলশিল্পী রবি রায়।

রবির বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, তিনি এক মনে দাওয়ায় বসে পোলো তৈরি করে যাচ্ছেন। বললেন, ‘আমি সারাবছর প্যান্ডেল তৈরির কাজ করি। অবসর সময়ে পোলো তৈরি করি। একটি বাঁশ দিয়ে তিন থেকে চারটি পোলো তৈরি করা যায়।’ একেকটা পোলো তৈরি করতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। তারপর সেগুলো হলদিবাড়ি বা দেওয়ানগঞ্জ হাটে প্রতি পিস ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি করেন। জানালেন, চাহিদা আগের মতো না থাকলেও বছরভর এগুলি বিক্রি হয়। এতে তাঁর বাড়তি আয় হয়।

স্থানীয় প্রবীণ নরেশ রায় বলেন, ‘পুকুরপাড়ে বা জলাশয়ের কম জলে পোলো দিয়ে মাছ ধরা হয়। প্রথমে পোলোটিকে জলের ওপর কিছুক্ষণ ধরে রাখা হয়। তারপর তার ভেতর মাছ ঢুকলে সেগুলো ছটফট করতে থাকে। তখন বোঝা যায় মাছ ধরা পড়েছে। এরপর পোলোটিকে কাদামাটির ওপর ভালোভাবে চেপে ধরা হয়, যাতে কিছুতেই ফাঁক দিয়ে মাছ বেরিয়ে যেতে না পারে। এরপর ওপরের খোলা মুখ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে যেমন খুশি মাছগুলো তুলে আনা যায়।’

বাঁশ এবং সুতলি দিয়ে ঝুপড়ির আদলে তৈরি যন্ত্রটিকে আঞ্চলিক ভাষায় পোলো বা ঝকা বলে। পোলোর ওপর দিকটা খোলা রাখা হয়। ছোট ছোট ফাঁকের তলাবিহীন পোলো মাছ শিকারিদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। একেকটি পোলো বা ঝকা যেন শৈল্পিক কারুকার্যের নিদর্শন।

স্থানীয় শিক্ষক গৌরাঙ্গ বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘গ্রামবাংলায় এককালে পোলো বা ঝকা দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য দেখা যেত। মাছ ধরার সেই কাজে যেমন বড়রা অংশ নিতেন, তেমনি খেলার ছলে অংশ নিত কচিকাঁচারাও। কিন্তু ধীরে ধীরে এই অভ্যাস কমে আসায় কমছে পোলো বা ঝকার চাহিদা। ফলে শিল্পীরাও এটা তৈরির আগ্রহ হারাচ্ছেন।’

তবে এই কুটিরশিল্প যাতে বিলুপ্তির পথে চলে না যায়, তার জন্য রবির মতো কারিগররা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশার কথা, মানুষ এখন অন্যান্য কাজেও পোলো ব্যবহার করছে। মাছ ধরা ছাড়াও মুরগি কিংবা হাঁস রাখার কাজে সেগুলো বাড়িতে রাখছেন অনেকে। এতে এই কাজ চালিয়ে যেতে উৎসাহ পাচ্ছেন রবির মতো শিল্পীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *