কোচবিহার: চিকিৎসকরা ঠিকমতো সময় দিচ্ছেন না, চিকিৎসক ও রোগীদের আন্তরিক সম্পর্ক তলানিতে, সেজন্য জেলার অনেক রোগী ভিনরাজ্যে চলে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রকাশ্যে এই অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগে উপস্থিত চিকিৎসকরা রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান। এদিন উদয়ন বলেন, ‘একের পর এক পরিষেবা চালু করা হলেও চিকিৎসকরা ঠিকমতো সময় দিচ্ছেন না। রোগীদের সঙ্গে সময় নিয়ে কথা বলছেন না। ফলে মানসিকভাবে রোগীরা ভেঙে পড়ছেন। সেজন্য এখানে পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও ভিনরাজ্যে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’
মঙ্গলবার এমজেএন মেডিকেলে ১৫ শয্যার ডায়ালিসিস পরিষেবা শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর পাশাপাশি জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা বর্মন, পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা শাসক অরবিন্দকুমার মিনা, পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য অভিজিৎ দে ভৌমিক ও মেডিকেলের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল সহ অন্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বক্তব্য রাখার সময় চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগীদের সম্পর্ক নিয়ে উদয়ন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই অভিযোগ অবশ্য অনেকদিনের। বিভিন্ন সময় রোগী ও তাঁদের পরিজন অভিযোগ করেন, তাঁদের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলা হয় না। চিকিৎসক, নার্সদের কাছে কিছু জানতে চাইলে দুর্ব্যবহার মেলে। এদিন মন্ত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ ওঠায় মেডিকেলের অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মেডিকেলের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডলের কথায়, ‘পরিষেবার দিক থেকে কোনও খামতি রাখা হয় না। একজন রোগী ভর্তি হওয়ার পর থেকে সমস্ত রকম চিকিৎসা করা হয়। তবে চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে রোগীদের সম্পর্ক নিয়ে একটি খামতি রয়েছে বলে শোনা গিয়েছে। আমরা সেই সমস্যা মেটানোর জন্য নিয়মিত কাজ করছি। আশা করছি ধীরে ধীরে সমস্যা মিটবে।’
রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কে পরিজনরা ঠিকমতো তথ্য জানতে পারেন না বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ মেটাতে কয়েক বছর আগে প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা আলাদা করে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই সময়গুলিতে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের রোগীর পরিজনের সঙ্গে আলোচনা করার কথা। তবে অনেক চিকিৎসক সেই নিয়ম মানেন না বলে অভিযোগ। মন্ত্রীর সংযোজন, ‘দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল সহ নানা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের বেসরকারি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দালালচক্র সক্রিয় রয়েছে।’ চিকিৎসা নিয়ে এধরনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।