তুফানগঞ্জ: দেখতে দেখতে চার দশক পার। পাকা তো দূরের কথা, এখনও গ্রাভেল রাস্তা তৈরি হয়নি দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের নেপালের খাতা এলাকায়। কাঁচা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা। রাস্তাজুড়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। বছরের অন্য সময় কোনওরকমে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষাকালে ভোগান্তির শেষ থাকে না। বিগত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তার বেহাল দশা যেন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও রাস্তা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রমীলা বিশ্বাস দাস বলেন, ‘রাস্তাটি তৈরির বিষয়ে উপরমহলে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’
দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের নেপালের খাতা থেকে পাগলির পাঠ ও মন্টুর বাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তাটি জন্মলগ্ন থেকেই কাঁচা। বৃষ্টিতে কাদায় সাইকেলের চাকা আটকে যায়। টোটো কিংবা ছোট গাড়িও যেতে চায় না। গেলেও যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। ওই রাস্তা দিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা সহ বহু মানুষ যাতায়াত করেন। বেহাল রাস্তার কারণে স্কুলে পর্যন্ত যেতে চায় না পড়ুয়ারা। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও চরম অসুবিধায় পড়তে হয়। এলাকাটি মূলত কৃষিপ্রধান। ফসল তুলে ঘরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও কৃষকদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
কবে সমস্যার সমাধান হবে তা গ্রামবাসীদের জানা নেই। প্রশাসনেরও কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। ভোটের আগে নেতারা এসে ওই রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। বছর খানেক আগে নিজেদের টাকা ব্যয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সারাই করেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দা পরেশচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘বর্ষাকালে প্রতি বছর আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হয়। এবার অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, জুতো পরে হাঁটা যাচ্ছে না। খালি পায়ে হেঁটে যাওয়াটাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়ি থেকে নানান কাজে বেরোতে হয়। এভাবে গৃহবন্দি হয়ে কতদিন কাটাব? ছেলেমেয়েরাও স্কুলে যেতে চায় না। রাস্তায় নামলেই কাদা। জামাকাপড় নোংরা হয়ে যায়। ওদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।’
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, ‘আমি রাস্তা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। দিদিকে বলোতে অভিযোগ জানাতে বলেছিলাম গ্রামবাসীদের।’ এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দা অনীতা রায় বলেন, ‘আমরা ছয় মাস আগে দিদিকে বলো-তে অভিযোগ জানানোর পর ৯০ দিনের মধ্যে রাস্তা তৈরির বিষয়ে একটি বার্তা আসে। কিন্তু কাজ শুরুই হয়নি। পাশের দেওচড়াই বাজার, ঝলঝলি সন্তোষপুর গ্রামে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা তৈরি হলেও আমাদের গ্রামে হয়নি।’