পারডুবি: সরকারি প্রকল্পের জল সরবরাহ করার জন্য জলের পাইপ থেকে বিবকক লাগানো হলেও উত্তর বরাইবাড়ি সহ বেশকিছু এলাকায় জল মিলছে না বেশ কয়েক মাস ধরে। আর এর জেরে ভোগান্তি বেড়েছে। এই এলাকার কিছুটা দূরে উত্তর বরাইবাড়ি ও টাউরিকাটা গ্রামের সংযোগস্থলে বেশকিছু জায়গায় আবার জলের পাইপ ফেটে পড়ে রয়েছে। আর এর ফলে উত্তর বরাইবাড়ি, টাউরিকাটা এলাকায় পানীয় জল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা।
মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের আইটিআই সংলগ্ন উত্তরবাড়ি এলাকা পানীয় জল, বেহাল রাস্তাঘাট সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। পানীয় জলের ট্যাপকল থাকলেও জল মেলে না। গ্রামে ঢোকার রাস্তার পাশে ও বেশকিছু বাড়িতেও রয়েছে কয়েকটি ট্যাপকল। অথচ জল পান না এলাকাবাসী। গ্রামবাসী বারবার জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ সরকারের কথায়, ‘রাজ্যে শাসকদল উন্নয়নের প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু আসলে কেমন উন্নয়ন হয়েছে তা গ্রামে এলেই বোঝা যায়। এসব তার অন্যতম উদাহরণ। আমরা ক্ষমতায় এলে এলাকার পানীয় জলের সমস্যা দূর করব। এটাই হবে আমাদের প্রথম কাজ।’সংশ্লিষ্ট এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মণ্ডলের কথায়, ‘পানীয় জলের সমস্যায় জেরবার মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর বরাইবাড়ি সহ বেশকিছু এলাকার প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা। এবিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
স্থানীয় মদন মণ্ডলের অভিযোগ, কল থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা জল পাচ্ছেন না। ভরসা এখন নলকূপের জল। অধিকাংশ কলই এমন অকেজো। কোথাও আবার পাইপ ফেটে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কল্পনা মণ্ডলের কথায়, ‘জল না মেলায় উপায় না থাকায় বাড়ির নলকূপের আয়রনযুক্ত জল পান করতে হচ্ছে। সমস্যা বাড়ছে।’ একই অভিযোগ কাঞ্চন মণ্ডল, গৌরাঙ্গ মণ্ডল, অনিল মণ্ডল, সুনীল মণ্ডলদের। তাঁরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েও লাভবান হননি। স্থানীয়দের অভিযোগ, আয়রনযুক্ত জল খাওয়ার ফলে সারাবছরই প্রায় পেটের সমস্যা লেগে থাকে।
এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) ডাঃ সুকান্ত বিশ্বাস। বললেন, ‘সাধারণ জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খেলে এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তবে পরিস্রুত পানীয় জল না পান করলে সাধারণত পেটের সমস্যা, ডায়ারিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’ মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালের সুপার মাসুদ হাসানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এবিষয়ে কিছু বলতে চাননি।
পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পূর্ণিমা বর্মনের কথায়, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’ মাথাভাঙ্গা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সাবলু বর্মনের কথায়, ‘এলাকার সমস্যার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব।’