Cooch Behar | কাঠের বদলে মডিউলারে ঝোঁক! বদলেছে মধ্যবিত্তের ঘরকন্না

Cooch Behar | কাঠের বদলে মডিউলারে ঝোঁক! বদলেছে মধ্যবিত্তের ঘরকন্না

ভিডিও/VIDEO
Spread the love


কোচবিহার: মেয়ের বিয়েতে উপঢৌকন হিসাবে কাঠের খাট, আলমারি, ড্রেসিং টেবিল, আলনা দেওয়ার রীতি চালু ছিল, আজও আছে। কিন্তু তার রকমফের হয়েছে অনেকটা। আজকাল কাঠের আলমারি বলতে গেলে উঠেই গিয়েছে আসবাবের অভিধান থেকে। তেমনি অনেকটাই ব্যাকডেটেড হয়ে গিয়েছে আলনা। আধুনিক বাড়িতে আজকাল আলনা দেখা যায় না বললেই চলে। সেই জায়গায় এসেছে নানা ধরনের স্টোরেজ।

সদ্য মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন নীলাদ্রি গুহ রায়। খাটটা কাঠের দিলেও বাকি সবকিছুই আধুনিক আসবাবপত্র দিয়েছেন তিনি। এই কথার সমর্থন পাওয়া গেল কাঠের ব্যবসায়ী নিশিকান্ত তালুকদারের বক্তব্যে। জানালেন, আজকাল বিয়ে ছাড়া আর কেউ তেমন কাঠের খাট বা পালঙ্ক বানাতে চান না। যদি কারও কাঠের আসবাবের খুব শখ থাকে তাঁরাই একমাত্র কাঠের আসবাবপত্র বানান। তবুও সংখ্যায় তা ভীষণই কম। তাঁর মতে, কাঠের দাম অনেকটাই বেশি হয়ে যায়। সেজন্যই হয়তো ঝোঁকটা মানুষের কমে যাচ্ছে। তবে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, কাঠের জিনিসের রিসেল ভ্যালু আছে যা এই আধুনিক ফার্নিচারে কখনোই পাওয়া যাবে না।
ইদানীং জায়গার অভাবে ছোট বাড়ি তৈরি করতে হচ্ছে। তেমনি ফ্ল্যাটের দৌলতে ঘরও সেরকম বড় করা যাচ্ছে না। তবে শুধু দাম নয় কাঠের জিনিস অনেকটা জায়গা দখল করে থাকে, বললেন রূপনারায়ণ রোডের শিশির সাহা। তাঁদের বাড়িতে বহু বছরের পুরোনো একটি বিরাট কাঠের পালঙ্ক ছিল। জায়গার অভাবে সেই পালঙ্ক খুলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

তেঁতুলতলার দেবশ্রী সাহার বক্তব্য অবশ্য একদমই ভিন্ন। আধুনিক আসবাবের চাইতে তাঁর এখনও পছন্দ সেই সাবেকি কাঠের আসবাবপত্র। খাট তো বটেই বাড়িতে দুটো ঘরে যে দু’খানা সোফা রয়েছে সেগুলো সবই কাঠের তৈরি বলে জানালেন দেবশ্রী।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচির একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে। এখন আর আগের মতো ফুল লতাপাতা আঁকা খাট একদমই নাপসন্দ এই যুগের ছেলেমেয়েদের, বললেন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার সেবাব্রত ধর। তাঁর মতে, ‘আজকাল বাড়ি বা ফ্ল্যাট বানানোর সঙ্গে সঙ্গে প্লাইউড দিয়ে শোয়ার ঘর থেকে শুরু করে রান্নাঘর পর্যন্ত সবটাই একবারে বানিয়ে নিচ্ছে মানুষ। এতে যেরকম স্থানসংকুলান হয়, তেমনি স্টোরেজেরও একটা সমস্যা মেটে। সবচেয়ে বড় কথা প্রয়োজন অনুযায়ী জায়গা বুঝে এগুলো বানানো যায়। এই ফার্নিচারগুলো অনেকটাই হালকা হয়, সেই কারণে ব্যবহার করাও অনেক সুবিধাজনক।’

সেবাব্রত জানালেন, আজকাল যাঁরা খাট বানাচ্ছেন বেশিরভাগই হাইড্রলিক সিস্টেমের খাট বানাতেই পছন্দ করছেন। গাড়ির বনেটের মতো এখানে ভেতরের পাটাতন উঠে যায় আবার জিনিসপত্র রাখার পর নীচে নেমে আসে। এছাড়াও ওয়াল টু ওয়াল ওয়ার্ডরোব বানিয়ে নিলে সবার জামাকাপড় সেখানে এঁটে যাচ্ছে। এমনকি বসার টুলেও থাকছে জিনিস রাখার জায়গা। সবচেয়ে বড় কথা এটা অনেকটাই পকেট ফ্রেন্ডলি। কাঠের চেয়ে অনেক সস্তায় এগুলো তৈরি করা যায়।

বাড়িতে বহু বছর কাঠের সাবেক আসবাবপত্র ব্যবহার করেছি কিন্তু অত ভারী বক্স খাটের উপরের ডালা খুলে জিনিসপত্র ঢোকানো আর বের করা খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছিল। সেই কারণেই মডিউলার ফার্নিচার করে নিয়েছি বাড়িতে। এছাড়াও কাঠের চেয়ে এগুলো দেখতে অনেকটাই বেশি সুন্দর লাগে, বললেন এনএন রোডের সংগীতা ও বিশ্বজিৎ বণিক।

একই সুর শোনা গেল শতাব্দী ও বিজিত মিত্রের কথায়। সদ্য ফ্ল্যাট কিনে সেটাকে আধুনিকভাবে সাজিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। আগেকার মতো কাঠের ঠাকুরের সিংহাসন না বানিয়ে দেয়ালে ঠাকুরপুজোর তাক বানিয়ে নিয়েছেন। শতাব্দীর কথায়, কাঠে ওই ফিনিশিং কখনোই আসবে না, এছাড়া কাঠের ফার্নিচার অনেকটাই ভারী হয়, আর দামও অনেক বেশি পড়ে যাবে, তাই প্লাইউড দিয়েই সমস্ত আসবাবপত্র বানিয়ে নিয়েছি। ২৫ বছরের গ্যারান্টিও আছে, তারপর দেখা যাবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *