তুফানগঞ্জ: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। বৃহস্পতিবার রাতে নাটাবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। জ্বরে আক্রান্ত আত্মারাম আর্যকে (৫২) ইনজেকশন দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাতেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর পরিবার বিক্ষোভ দেখায়। মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধে চিকিৎসক ও নার্সদের পালটা হেনস্তা করার পাশাপাশি রোগীদের বসার আসন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি অন্য রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রিকুমার আড়ি বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের তদন্তকারী কমিটি তৈরি করে ঘটনার তদন্ত করা হবে। সেই তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, মৃত আত্মারাম আলিপুরদুয়ার জেলার শামুকতলা থানার আর্যপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। পরিবার জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগতে থাকায় বুধবার তাঁকে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের নাটাবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ, শুরু থেকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সঠিক পরিষেবা মিলছে না। রোগীর স্যালাইন বন্ধ হলেও নার্স ও চিকিৎসকদের হুঁশ থাকে না। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর স্যালাইন বদলানো হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে তিনি খানিকটা সুস্থ বোধ করেন। দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু বিকেল হতেই ফের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। পরিবারের সদস্যরা নার্সকে বিষয়টি জানান। নার্স চিকিৎসককে বিষয়টি জানাতে বলেন। চিকিৎসক জ্বর কমার একটি ওষুধ দেন। এরপর নার্স আত্মারামকে ইনজেকশন দেন। ইনজেকশন দেওয়ার সময় তিনি কয়েকবার খিঁচুনি দিয়ে ওঠেন। স্ত্রীকে জানান, তাঁর শরীর অসহ্য জ্বালাপোড়া করছে। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, ভুল ইনজেকশন দেওয়ার ফলে আত্মারামের মৃত্যু হয়েছে। এরপর মৃতের পরিজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মৃতের স্ত্রী
ঊষারানি আর্যর কথায়, ‘জ্বর না কমায় স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। পরীক্ষার রিপোর্ট না দেখে ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপরে শরীর খিঁচুনি দিয়ে ওঠে। মুখ দিয়ে রক্ত বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে স্বামীর মৃত্যু হয়। কী ইনজেকশন দেওয়া হল, তা আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি। আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করব।’
তবে মৃতের পরিবার হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মৃতের ভাই পরাণ আর্যর বক্তব্য, কী ইনজেকশন দেওয়া হল, চিকিৎসকদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। এর বাইরে কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ তুফানগঞ্জ এসডিপিও কান্নিধারা মনোজ কুমার জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের জন্য দেহ কোচবিহার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
The put up Cooch Behar | ইনজেকশনেই মৃত্যু? উত্তেজনা নাটাবাড়িতে appeared first on Uttarbanga Sambad.