Cooch Behar | আগুন নেভালেন ওপারের ওঁরা

Cooch Behar | আগুন নেভালেন ওপারের ওঁরা

শিক্ষা
Spread the love


দীপেন রায়, মেখলিগঞ্জ: ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে দুই দেশের বন্ধুত্বের নজির দেখলে কোচবিহারের (Cooch Behar) মেখলিগঞ্জের (Mekhliganj) কুচলিবাড়ি সীমান্ত। মঙ্গলবার দুপুরে সবাই যখন নানা কাজে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে আকবরপাড়ায় এক ভারতীয় বাসিন্দার বাড়ির খড়ের খাদায় আগুন লাগে। সেই আগুন দেখতে পেয়ে তা নেভাতে ছুটে আসেন ওপারের কৃষকরা। সীমানা ভুলে ভারতীয় কৃষকের খড়ের গাদার আগুন নেভাতে সাহায্য করেন ওপারের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান, সফিয়ার রহমান, ওয়ারুল ইসলামরা। ভারতীয় মাত্র ১৮টি পরিবার কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরে থাকে৷ যদিও সেই সময় অধিকাংশ বাসিন্দাই বাড়িতে ছিলেন না। ফলে ওপারের বাসিন্দাদের কেউ বালতিতে, কেউ বা রান্নাঘরের বাসনপত্রে জল নিয়ে ছুটে আসেন আগুন নেভাতে।

ওই আকবরপাড়ায় ঢুকতে বিএসএফের ওপি গেট পেরিয়ে যেতে হয়। সেই গেটে বিএসএফের খাতায় নাম লিখে গ্রামে প্রবেশ করতে হয়। মঙ্গলবার আচমকাই গ্রামের খইরুল হকের বাড়ির খড়ের গাদায় আগুন লাগে। পরিবারের লোকজন কেউ ছিলেন না। আশপাশের বাসিন্দারা আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। সেই চিৎকার শুনে আগুন নেভাতে ছুটে আসেন পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের পাটগ্রাম থানা এলাকার মেম্বারপাড়ার বাসিন্দারা। খইরুল বলেন, ‘বাড়ির বাইরে আগুন নিয়ে খেলছিল কয়েকটি বাচ্চা। আচমকা সেখান থেকে খড়ের গাদায় আগুন লাগে। প্রায় ৮ বিঘা জমির খড় পুড়ে গিয়েছে। গ্রামবাসী দুটি সেচের পাম্প চালু করে জল দিয়ে আগুন নিভিয়েছেন।’ ওপারের বাসিন্দা সফিয়ার রহমান বলেন, ‘কাঁটাতার থেকে খানিকটা দূরে আমাদের একেবারে পাশেই এই কয়েকটি ভারতীয় পরিবার বসবাস করে। চিৎকার শুনে আমরা সকলেই আগুন নেভানোর জন্য ছুটে আসি।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খড়ের গাদায় আগুন লাগে। কিন্তু মুহূর্তে আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলে বড়সড়ো দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। স্থানীয় তরুণ নুর আলম বলেন, ‘আমাদের চিৎকার শুনে বাংলাদেশি গ্রামের মানুষ ছুটে না এলে পরিস্থিতি ভয়ানক হত।’

ভারতে ঢুকে আগুন নেভাতে গিয়ে ওপারের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান বলেন, ‘কাঁটাতারের ভিতরে বিএসএফ জওয়ানদের অতটা কড়াকড়ি থাকে না। তাছাড়া বিপদের সময় ভারতীয়দের সাহায্য করতে দেখে বিএসএফ এলেও কিছু বলেনি। বরং তারা প্রশংসা করেছে।’

আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মেখলিগঞ্জ দমকলকেন্দ্রের একটি ইঞ্জিন, কুচলিবাড়ি থানার পুলিশ ও কর্তব্যরত বিএসএফ আধিকারিকরা। যদিও তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাজেশ রায়ের কথায়, ‘কাঁটাতারের ওপারের গ্রাম। খবর পেয়েই আমি দমকলকেন্দ্রে যোগাযোগ করি। কিন্তু মেখলিগঞ্জ থেকে প্রত্যন্ত এই গ্রামে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছানোর আগেই গ্রামবাসী নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। গ্রামে ঢোকার রাস্তাও সরু। সেই কারণে দমকলের গাড়িও সেখানে পৌঁছাতে পারত না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *