Chanchal | কার্যত ভিআইপি ট্রিটমেন্টে ঘরে ফিরল মুক্তাররা! তৃণমূলের প্রচারের মুখ সাজেনুর?

Chanchal | কার্যত ভিআইপি ট্রিটমেন্টে ঘরে ফিরল মুক্তাররা! তৃণমূলের প্রচারের মুখ সাজেনুর?

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


সৌম্যজ্যোতি মন্ডল, চাঁচল: চাঁচলের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম পিরোজাবাদ। যে গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। রাস্তার বেহাল দশা। ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধিদেরও তেমন দেখা মেলে না। কিন্তু বিগত কয়েকদিনে বদলে গেছে ছবিটা। তবে সেই বদল মানুষের জীবনযাত্রার বা রাস্তার নয়। পরিবর্তন বলতে, এলাকায় বেড়েছে পুলিশ প্রশাসন এবং নেতা মন্ত্রীদের আনাগোনা। নেপথ্যে, ওই এলাকারই মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক সাজেনুর খাতুন এবং তার নাবালক সন্তানকে মারধরের অভিযোগে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর টুইট।

বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন পুলিশ প্রশাসনের ঘেরাটোপে সাজেনুরদের নিয়ে মালদা থেকে আসা কনভয় এলাকায় ঢুকল, তখন স্থানীয়রা বেশ ভিড় জমিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বুধবারই সাজেনুর পারভীন এবং তাঁর স্বামী মুক্তার খান সন্তান ও শ্বশুড়-শাশুড়িদের নিয়ে কলকাতায় ফিরেছিলেন। সেখানে সাজেনুরকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ।

তখনই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে দিল্লি পুলিশ এবং কেন্দ্রের শাসক দলের সংঘাত বাড়বে। আর আজকের এই ‘ছবি’ নিয়ে রাজনৈতিক মহলের চর্চায় যে সম্ভাবনার কথা উঠে আসছে তা হল, এই মহিলা শ্রমিক হয়তো ভোট প্রচারেরও মুখ হতে পারে রাজ্যের শাসক দলের।

এদিন ওই পরিবার যখন গ্রামে ফিরল, তাদের সঙ্গে ছিল চাঁচলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখার্জি, চাঁচল ১ নং ব্লকের বিডিও থিনলে ফুনস্টক ভুটিয়া, চাঁচল থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুন্ডু, স্থানীয় বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জামাকাপড় সহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয় ওই পরিবারকে। বিধায়ক পাকা ঘরের জন্য নিজের বেতন থেকে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সন্ধ্যেবেলা পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি।

পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকের বাড়ির বাইরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে দুইজন হোম গার্ড এবং দুইজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। এমনকি অচেনা বা বহিরাগত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা নিয়েও মানা করা হচ্ছে ওই পরিবারকে।
এই প্রসঙ্গে সাজেনুর পারভীন বলেন,”দিল্লি পুলিশ যেটা বলেছে সম্পূর্ণ মিথ্যা। মুখ্যমন্ত্রীর পোস্টের পর আমাদেরকে আটক করে একাধিক কাগজে সই করে নিয়েছিল। পুলিশ আমাদেরকে বাংলাদেশি বলছিল। প্রথমে যে চারজন এসেছিল, সেই চারজন আমার স্বামীর খোঁজ করছিল। তাকে না পেয়ে আমাকে এবং আমার সন্তানদের তুলে নিয়ে যায়। একটি পার্কের কাছে মারধর করে। জয় শ্রীরাম বলতে বলে। তারপর ২৫ হাজার টাকা নেয় ছাড়ার জন্য। কিন্তু দিল্লি পুলিশ সেই পার্কের সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আনছে না।”

এই ঘটনার রাজনীতিকরণ নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির বক্তব্য, “এখানে রাজনীতির কিছু নেই। এটা শুধু সাজেনুরের লড়াই না। দিল্লির ফ্যাসিবাদের সঙ্গে বাংলার লড়াই।”

স্থানীয় বিধয়ক নিহার ঘোষ বলেন,”প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দিল্লি পুলিশ মিথ্যাচার করছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এর শেষ দেখে ছাড়বেন।”

উত্তর মালদার বিজেপি সংসদ খগেন মুর্মুর বক্তব্য,”সম্পূর্ণটা যে চক্রান্ত বোঝা যাচ্ছে। রাজনীতি করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।”

এসডিপিও সোমনাথ সাহার বক্তব্য,”ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে নিরাপত্তা স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, এদিন সকালে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে মালদা টাউন স্টেশনে নামে ওই পরিবার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। তারপর পুলিশি সুরক্ষায় পৌছে দেওয়া হয় বাড়িতে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *