উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মালদার (Malda) মোথাবাড়িতে (Mothabari) অশান্তির ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta Excessive Court docket) বিচারপতি সৌমেন সেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে আদালত। শুক্রবারই তার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
পাশাপাশি ঘটনায় মালদার এসপি এবং ডিএম’কে অ্যাকশন রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিচারপতি সৌমেন সেন জানিয়েছেন, ঘটনার স্পর্শকাতরতা দেখে মনে হয় রাজ্যের দায়িত্ব নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। বুধবার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গেও বিচারপতি এও বলেন, এই মুহূর্তে কেন্দ্রের ভূমিকা আছে বলে মনে হয় না। আমরা সবাই চাই শান্তি। রাজ্য সেটা দিতে ব্যর্থ হলে দেখা যাবে। একইসঙ্গে রাজ্যকে ফেসবুক লাইভ সহ যাবতীয় ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোষ্ঠী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্র চেহারা নেয় মালদার মোথাবাড়ি থানা এলাকা। পুলিশের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ হয়। দফায় দফায় উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশের গাড়ির কাচ ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয়ে ওঠে। মোথাবাড়ি সদরের চার প্রান্তে রাজ্য সড়কের উপর ক্ষিপ্ত জনতা ভাঙচুর, আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনই অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মালদা সদর থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী পাঠানো হয়। নামানো হয় র্যাফ। কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালায় পুলিশ। জনতার ছোড়া ইট পাটকেলে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে খবর। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ তারিখ ঘটনার সূত্রপাত। সেই রাতে একদল তরুণ ডিজে ও পটকা ফাটিয়ে চৌরঙ্গি মোড়ে মিছিল করে যাচ্ছিল। পটকা ফাটানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার না করায় গতকাল অপরপক্ষ চৌরঙ্গি মোড়ে জমায়েত শুরু করে। মোথাবাড়ি থানার দুই প্রান্তে কয়েকশো মিটার দূরে ধীরে ধীরে জমায়েত বাড়তে থাকে। তারপরই পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। অভিযোগ, সেইসময় পুলিশের উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির অবনতি হয়। ওই সময় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পুলিশের উপর আক্রমণ চালায় কিছু লোকজন। এদিকে এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল চুপ করে আছে কেন, সেই অভিযোগ তুলে ময়দানে নেমেছে বিরোধীরা।