পাটনা: মাসকয়েক বাদেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগাঁটবন্ধনের শরিক কংগ্রেস রাজ্যে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করছে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ‘ভূমিপুত্র’ কানহাইয়া কুমারকে। সোমবার বিহারের (Bihar) বেগুসরাইয়ে তাঁর উদ্যোগে হওয়া ‘পলায়ন রোকো, নকরি দো’ পদযাত্রায় অংশ নেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi)। পরে পাটনায় (Patna) সংবিধান সুরক্ষা সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। দুই জায়গাতেই বিহারে ক্ষমতাসীন জেডিইউ-বিজেপি জোট সরকারের চেয়ে কেন্দ্রের সমালোচনায় বেশি সময় ব্যয় করেন রাহুল। সংরক্ষণ, কর্মসংস্থান… একের পর এক ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করেন তিনি।
বেগুসরাইয়ে পদযাত্রা শুরুর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতি নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন রাহুল। সেখানেও তাঁর তোপের মুখ ছিল মোদির দিকে। কংগ্রেস নেতা লেখেন, ‘ট্রাম্প সেই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দিয়েছেন। বাস্তব পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদিকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। ভারতকে বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। আমাদের কাছে একটি স্থিতিশীল, উৎপাদনভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে যা সব ভারতীয়র জন্য কার্যকর হবে।’
দিনভর বিরোধিতার সেই চড়া সুর বজায় রেখেছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। এদিন পাটনায় সংবিধান সুরক্ষা সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের কারণে শেয়ার বাজারে বিপর্যয় ঘটেছে। এর অর্থ শেয়ারে বিনিয়োগ আপনাদের ক্ষেত্রে লাভজনক হচ্ছে না। এখানে প্রচুর টাকা ঢালা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা তার সুবিধা নিতে পারছেন না।’ সংরক্ষণ ও জাতগণনা ইস্যুতেও ফের মুখ খুলেছেন তিনি। ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ কোটার বাধা সরিয়ে জাতগণনার ভিত্তিতে সংরক্ষণ চালু করার পক্ষে সওয়াল করেছেন।
রাহুল বলেন, ‘কংগ্রেস জাতগণনার ব্যবস্থা করে সামাজিকভাবে পিছিয়ে-পড়া শ্রেণিগুলিকে উন্নতির সুযোগ করে দেবে। আম্বেদকার দলিতদের জন্য লড়াই করেছিলেন। তিনি দলিতদের কষ্ট বুঝতেন। তিনি সত্যের জন্য লড়াই করেছিলেন। মহাত্মা গান্ধিও সত্যের পথে হেঁটেছিলেন। সেইজন্য তাঁর আত্মজীবনীর নাম ‘মাই এক্সপেরিমেন্টস উইথ ট্রুথ’।’
বেগুসরাইয়ের পদযাত্রায় রাহুলের সঙ্গে পা মিলিয়েছেন বহু তরুণ। সেখানে তাঁর বক্তব্যে গুরুত্ব পেয়েছে কর্মসংস্থান। রায়বেরেলির সাংসদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিহারের যুব সম্প্রদায়ের সমস্যার প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এখানকার তরুণরা সরকারি চাকরি খুঁজছেন। কিন্তু বেসরকারিকরণের কারণে সেই সুযোগ দিন দিন কমছে। রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে আমাদের এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।’