বিশ্বজিৎ সরকার, হেমতাবাদ: রাধিকাপুর স্টেশনে ধরা পড়ল তিন বাংলাদেশের তরুণ (Bangladeshis Arrest)। গ্রেপ্তার করেছে রেল পুলিশ। ধৃত তিনের নাম আরমান আলি (২৮), আবু সামাদ আলী (২০), রৌশন রানা (২০)। তিনের মধ্যে আরমান ও আবুর বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার রংসিয়া গ্রামে। সোমবার ধৃতদের রায়গঞ্জের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন।
রায়গঞ্জ সিজেএম কোর্টের সরকারি আইনজীবী দীপ্তেশ ঘোষ বলেন, ‘ওই তিন বাংলাদেশির রাধিকাপুর কলকাতার ট্রেনে করে কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল। রেল পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। গতকাল রাত নটা নাগাদ ওই তিন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে জেরা শুরু করে। তারা স্বীকার করে বাংলাদেশ থেকে ৬ মাস আগে ভারতে প্রবেশ করেছিল। দীর্ঘ কয়েক মাস রাজস্থানে নির্মাণশ্রমিকের কাজে কর্মরত ছিল। সম্প্রতি ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ হওয়ার জন্য রাজস্থান থেকে দিল্লিতে আসে। সেখান থেকে রাধিকাপুরে আসার পর ভারতীয় দালাল মারফত কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই রেল পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় ৩ বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গ্রেপ্তার করে এদিন রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করে। রেল পুলিশের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘ধৃতরা ভারতের হেমতাবাদ থানার চৈনগর বিওপি দিয়ে দালাল মারফত ১৫০০০ টাকার বিনিময়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেই সময় ভারতীয় দালালকেও ১৫০০০ টাকা দিতে হয়। মোট ৩০০০০ টাকার বিনিময়ে দীর্ঘ ছয় মাস ঠিকাদার মারফত রাজস্থানে শ্রমিকের কাজ করতে যায়। সেখান থেকে ফিরে গতকাল রাতে ফের কলকাতা যাওয়ার উদ্দেশে ট্রেনে ওঠার সময় রেল পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তারা স্বীকার করে তারা বাংলাদেশি।’ কোন দালাল মারফত ভারতে প্রবেশ করেছে ও ভারতের কোন দালাল তাদেরকে ভিন রাজ্যের ঠিকাদার মারফত কাজে পাঠিয়েছে তার সমস্ত বিষয় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন চারটি ভারতীয় সিম, চারটি বাংলাদেশি সিম ও ৩৫ হাজার টাকা ভারতীয় মুদ্রা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিন ধৃতদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ একাধিক নথি নেওয়া হয়। তবে ঘনঘন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা গ্রেপ্তার হওয়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন গোয়েন্দা কর্তারা। হেমতাবাদের চৈনগর বিওপি অথবা মালন বিওপি দিয়েই বাংলাদেশিরা টাকার বিনিময়ে ভারতে প্রবেশ করছে। তাদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে ভারতীয় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রামের একাংশ দালালরা। তাদের মধ্যে সম্প্রতি একজনকে গ্রেপ্তার করেছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ (Hemtabad Police)।