ঢাকা: স্কুলে ভেঙে পড়ছে যুদ্ধবিমান, বেআব্রু চিকিৎসা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর, পড়ুয়াদের বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ, জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ, ঘেরাও উপদেষ্টা থেকে প্রেস সচিব। ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে গিয়েছে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন। দিন যত গড়াচ্ছে ততই যেন নড়বড়ে হচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অবস্থা সামাল দিতে ফের পুরোনো অস্ত্রে শান দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)।
দু’দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফের আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধেই তোপ দাগলেন তিনি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কার্যত শেখ হাসিনার দলকেই দায়ী করলেন। তাঁর সুরে সুর মিলিয়েছেন আওয়ামী বিরোধী দলগুলির নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার রাতে বিএনপি, এনসিপি, জামায়াতে ইসলামি ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের (Bangladesh) নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন ইউনূস। বুধবার দুপুরে আরও ১৩টি দলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দ্বিতীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের মিজানুর রহমানের মতো নেতারা। সেই বৈঠকের পরেই নাম না করে আওয়ামী লিগকে নিশানা করেন ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আয়োজন ছিল সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে অতীতকে স্মরণ করা, সেজন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা দৃশ্যমান হত। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতে পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলির ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার। তা না হলে তারা এটাকে সুযোগ মনে করছে।’ আগামী দিনে আওয়ামী লিগের ওপর যে আরও তীব্র দমনপীড়ন নামতে চলেছে এদিন সরকারের তরফে সেই ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকা সফররত পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা পাক ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন রাজা নাকভি। পুলিশ প্রশিক্ষণ, ভিসা, রোহিঙ্গা, সাইবার অপরাধ দমন, বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে দু-পক্ষ।