সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: পাড়ার এক কিশোরীর সঙ্গে জোর করে সেলফি তোলায় ধুন্ধুমার বাঁধল বালুরঘাটে (Balurghat)। অভিযোগ, দুই বোন বাঁধ রোড দিয়ে যাওয়ার সময় পাড়ার এক কিশোর তাদের পথ আটকায়। দিদির সামনে বোনের সঙ্গে তারই মোবাইলে জোর করে সেলফি তোলে ওই কিশোর। নিজের মোবাইলেও সেই ছবি নিয়ে নেয়। এদিকে ওই কিশোরের প্রেমিকাকে এই ঘটনা জানায় দুই বোন। তাতেই চটে যায় কিশোর। তারপরই দুই বোনকে মারধর করে।
অভিযোগ, কিশোর কোমরের বেল্ট খুলে দুই বোনকে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। এমনকি ওই কিশোরের বাবা-মা তাতে সঙ্গ দেন বলে অভিযোগ। সোমবার বালুরঘাট থানায় এমনই অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। রবিবার রাতের এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় শহরের রঘুনাথপুর এলাকায়। ওই দুই বোনের ওপর এমন অত্যাচারের অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে বালুরঘাট থানার পুলিশ। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ডিএসপি (সদর) বিক্রম প্রসাদ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার কুপ্রভাবের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করতে আমরা নিয়মিত প্রচার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। রঘুনাথপুরের ওই ঘটনার অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোরের সঙ্গে নবম শ্রেণির ছাত্রীর বন্ধুত্ব রয়েছে। অভিযোগ, ওই কিশোর গার্লফ্রেন্ডের অনুপস্থিতিতে পাড়ার দশম শ্রেণির ছাত্রী এক বান্ধবীর সঙ্গে আত্রেয়ী নদীর বাঁধে গিয়ে সেলফি তুলেছিল। ওই সেলফি কার্যত জোর করে ওই কিশোর তুলেছিল বলে অভিযোগ। আর সেই কারণেই ওই কিশোরের গার্লফ্রেন্ডকে ওই ছবি দেখিয়ে দিয়েছিল পাড়ার সেই বান্ধবী। আর এই অপরাধেই ওই কিশোর ওই পাড়ার বান্ধবীকে বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। বেল্ট দিয়ে ওই কিশোরীকে পেটাতে দেখে তার মামাতো দিদি বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দুজনকে মারধর করার সময় কিশোরের বাবা-মা সঙ্গ দেন বলে অভিযোগ।
থানায় অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলে বাড়ির পাশেই তাঁর বোনকে নিয়ে ঘুরছিলেন। সেই সময় পাড়ারই ওই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র এসে জোর করে তাঁর বোনের ঘাড়ে হাত দিয়ে সেলফি তোলে। সেই ছবি তাঁর বোন ওই কিশোরের গার্লফ্রেন্ডকে দেখিয়ে দেয়। এতেই ওই কিশোর ও তার গার্লফ্রেন্ডের মধ্যে বিবাদ বাধে। আর তার জেরেই ওই কিশোর তার বোন ও তাঁকে বেধড়ক পিটিয়েছে। ওই সময় পাড়ার অন্যরা উপস্থিত থাকলেও কেউই সাহায্য করতে আসেননি। তাঁর বাবা-মা রক্ষা করতে এলে তাঁদেরকেও মার খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে, এভাবে দুই ছাত্রীর উপর প্রকাশ্যে আক্রমণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন শহরবাসী। শহরের এক শিক্ষিকা অন্তরা সরকার বলেন, ‘বালুরঘাট (Balurghat) শহর সংস্কৃতির শহর বলে পরিচিত। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছি, এই শহর কেমন যেন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, বদলে যাচ্ছে। মহিলাদের উপর নির্যাতনের ঘটনা এ শহরে বেড়েই চলেছে।’