বালুরঘাট: বালুরঘাটে রেলের কাজ বন্ধ করে দিলেন জমিদাতারা। জমির টাকা এখনও পাননি এমন অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দিলেন বালুরঘাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পর্ষদ এলাকার দুই জমিদাতা। বুধবার রেলের কাজের জন্য ট্র্যাক্টরে করে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই সময় কাজ বন্ধ করে দেন তারা। যার ফলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। বেশ কিছুদিন আগে রাস্তা নষ্ট হবে, এমন অভিযোগ তুলে রেলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার রেলের তরফে জমি নেওয়ার পরও টাকা না পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেন জমিদাতারা। তাদের দাবি যতদিন না তারা জমির টাকা পাচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত কোনওরকমভাবে কাজ করতে দেবেন না। এদিকে বারবার রেলের কাজ আটকে যাওয়ার ফলে সময়মতো তার কাজ শেষ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
যদিও এই ঘটনায় বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকারের কথায়, ‘এর আগেও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কাজ বন্ধ করার পেছনে শাসকদল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা রয়েছে। কারণ, তারা প্রথমবার কাজের জন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে তোলা চেয়েছিল। তা না দেওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে কাজ বন্ধ ছিল। অবশেষে পুলিশের উদ্যোগে সেই কাজ শুরু হয়েছিল। আজ ফের আবার সেই কাজ বন্ধ করে দেয়া হল।’
পুরো বিষয়টি খতিয়ে রাখার আশ্বাস দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। এদিকে রেলের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয় জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় বালুরঘাট পুরসভা এলাকায়। যদিও তৃণমূলের তরফে বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি সুভাষ চাকি। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কখনও উন্নয়নের বিরোধী নয়। বিজেপির তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন।’
ক্ষুব্ধ জমিদাতা নির্মল সুরের অভিযোগ, ‘রেল আমাদের চলাচলের জায়গা দখল করে নিয়েছে। আমার চলাচলের রাস্তা আগে রেল কর্তৃপক্ষ বের করে দিক। তা না হলে আমি চলাচল করব কী করে। পাশেই রয়েছে ছোটদের খেলার মাঠ। সেই মাঠটিও রেল নিয়েছে। কিন্তু তার বদলে কোনও মাঠ এখনও দেওয়া হয়নি। সেই মাঠের টাকাই বা কার কাছে রয়েছে, তা নিয়েও কিন্তু আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। এইসব কারণে আমরা আজ কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’
ক্ষুব্ধ জমিদাতা সুব্রত সরকারের কথায়, ‘আমার দাদুর আশপাশের জমির টাকা সকলে পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আমি এখনও টাকা পাইনি। দীর্ঘদিন প্রশাসন ও আদালতের চক্কর কাটছি। যেহেতু এখনও আমি টাকা পাইনি তাই আমার জায়গার উপর দিয়ে রেলের কোনও জিনিস নিয়ে যেতে আমি দেব না। টাকা দিয়ে জমি ব্যবহার করুক তারা।’
ট্র্যাক্টরচালক গোলাপ দেবনাথ বলেন, ‘এদিন সকালবেলায় একটি ঝামেলা হয়েছিল। তারপরে বেশ কয়েকজন আমাদের ট্র্যাক্টর চলাচল বন্ধ করে দেয়। তারা নাকি জমির টাকা পায়নি।’ জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘এনিয়ে কোনওরকম সমস্যা থাকলে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অভিযোগ করা যেতে পারে। অভিযোগ পেলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’