রূপক সরকার, বালুরঘাট: অবশেষে বালুরঘাটে (Balurghat) শুরু হল শিল্প পার্ক নির্মাণ। শিল্প পার্ক তৈরি হবে শহর লাগোয়া ডাঙা পঞ্চায়েতের পশ্চিম রায়নগরের ৫.৩১ একর জমিতে। আট কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করে আপাতত ওই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টার বা পার্কের প্রাচীর ও পরিকাঠামগত কাজ করবে প্রশাসন। ২০২৪ সালে টেন্ডার করা হয়। যদিও কাজ কতদূর হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিরোধীরা।
জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার স্বপনকুমার প্রামাণিক বলেন, ‘৫.৩১ একর জমিতে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ সেন্টারের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রাচীর ও অন্যান্য পরিকাঠামোগত কাজ চলছে। আপাতত ওই কাজের জন্য আট কোটি ৩৬ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। এই কাজ হয়ে গেলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।’
পার্কের কাজ শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখেছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে জেলাবাসী। সকলেই আশা করছে, এর ফলে জেলায় কর্মসংস্থান হবে। যদিও এই কাজ আদৌ শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্ধিহান জেলার বিরোধী দলের নেতারা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রান্তিক ও বাংলাদেশ ঘেঁষা জেলা হিসেবে এখনও পরিচিত। জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। বিমান পরিষেবা চালু হয়নি। কলকারখানা নেই বললেই চলে। ফলে এই জেলার বহু শ্রমিক বাইরে কাজ করতে যান। দীর্ঘদিন ধরে জেলায় শিল্প তৈরির দাবি জানালেও কোনও লাভ হয়নি।
বামেদের আমলেও বালুরঘাটের রায়নগরে ওই শিল্প পার্ক স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথের ঘোষণা করেন। নির্বাচন পেরিয়ে কয়েক বছর পার হলেও কাজ শুরু না হওয়ায় চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়। অবশেষে প্রায় চার বছর পর শিল্প পার্কের কাজ শুরু করল জেলা প্রশাসন।
যদিও এই শিল্প পার্ক নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী। বলেন, ‘শিল্প ও তৃণমূল এক জিনিস নয়। তৃণমূল জমানায় শিল্প হবে এটা ভাবার বিষয়ই নয়। যদি সত্যি তারা শিল্প চাই, তাহলে ২০২১ সালে কাজের শিলান্যাস করে তার কাজ শুরু হতে চার বছর লাগত না।’ তাঁর কথায়, ‘সামনেই বিধানসভা ভোট। তার আগে এই কাজ আসলে লোক দেখানো।’
আরএসপির জেলা সম্পাদিকা সুচেতা বিশ্বাস বলেন, ‘কলকারখানা তৈরির জন্য বিশ্বনাথদার আমলে এই জায়গাটি সংরক্ষণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ বছর বাদে সেখানে শিল্প পার্ক হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ আইওয়াশ। কারণ, সামনেই ভোট। তার আগে কাজ করলে কিছু টাকাপয়সা আসবে। পার্টি ফান্ডে, নেতা-মন্ত্রীদের পকেটে কিছুটা ঢুকবে। কাজ কতদূর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’
এবিষয়ে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অম্বরিশ সরকার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এই জেলায় শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই কাজ হলে এলাকায় অনেক কর্মসংস্থান হবে।’