সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: একেই ভরা আত্রেয়ী চোখ রাঙাচ্ছে। রয়েছে বন্যার ভ্রূকুটি। আর তারই মধ্যে প্রবল বৃষ্টিতে বালুরঘাট (Balurghat) শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতের ভারী বৃষ্টিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে নদী সংলগ্ন এলাকায়। বালুরঘাট শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মিলন সংঘ পাড়া এলাকার কয়েকটি বাড়িতে ঘরের মধ্যেই এক বুক পর্যন্ত জল জমে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জিনিসপত্র ফেলেই বিভিন্ন ফ্লাড শেলটারে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। ওই পাড়ার চারটি পরিবার একটি কমিউনিটি হলে আশ্রয় নেয়। আরও তিনটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুরে জলমগ্ন এলাকায় গিয়ে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রীতম রাম মণ্ডল, বালুরঘাট পুরসভার এমসিআইসি বিপুলকান্তি ঘোষ প্রমুখ। শুধু মিলন সংঘ পাড়াই নয়, বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করায় রাত জাগতে হয়েছে বালুরঘাট শহরের ছিন্নমস্তা, নেপালিপাড়া, পদ্মপুকুর, সাহেব কাছারি সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। রাতভর মুষলধারে বৃষ্টির কারণে শহরের বহু জায়গায় জল জমে রয়েছে। দু’দিন ধরে আত্রেয়ীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি হয়েছে। সব স্লুইস গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সূত্রে খবর, গতকাল রাতে বালুরঘাট সহ আশপাশের অঞ্চলে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বালুরঘাটের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মিলন সংঘপাড়ার রিনা সূত্রধরের পরিবার বাড়ি ছেড়ে কমিউনিটি হলে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে প্রবল বৃষ্টিতে আমাদের বাড়িতে জল ঢুকতে শুরু করে। রাত যত বেড়েছে, আমাদের ঘরে তত জল হয়েছে। আমাদের বাড়ির অনেক সামগ্রী নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ফোন সহ অনেককিছুই খারাপ হয়ে গিয়েছে। একসময় বুকের কাছে জল উঠে আসছে দেখে রাতেই বাধ্য হয়ে আমরা ফ্লাড শেলটারে আশ্রয় নিই।’
খোকন সূত্রধর নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সারারাত ঘুমোতে পারিনি। জল একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে একেবারে আমাদের ঘর প্রায় ডুবিয়ে দিচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়ে সব জিনিসপত্র ফেলেই পরিবার নিয়ে ফ্লাড শেলটারে আশ্রয় নিয়েছি।’
চেয়ারম্যানের চার্জে থাকা পুরসভার এমসিআইসি বিপুলকান্তি ঘোষ বলেন, ‘গতকাল রাতে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। তাই অনেক জায়গাতেই জল জমে গিয়েছে। তবে উঁচু এলাকা থেকে দ্রুত জল নেমে যাচ্ছে। তিন নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। ওই পরিবারদের স্থানীয় কমিউনিটি হলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই পরিবারগুলির হাতে পুরসভার তরফে খাবার দেওয়া হচ্ছে।’