পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: বর্ষার মরশুম শুরুর পরই ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি অংশে জল জমেছে। জমা জলে যানবাহন যাতায়াতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। অভিযোগ, আত্রেয়ী খাঁড়ির পাশে বহুতল আবাসন গড়ে তোলায় জল বের হতে পারছে না। বালুরঘাট (Balurghat) পুরসভার তরফে অবশ্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বাড়িতে যাতে জমা জল না ঢোকে, তাই বালির বস্তা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন বাসিন্দারা। জমা জলে বিপাকে পড়েছেন জাতীয় সড়কের পাশে থাকা স্থানীয়রা। জলবন্দি মঙ্গলপুর এলাকার বাসিন্দারা দিন গুনছেন ডেঙ্গির আতঙ্কে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন সব জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যেখানে প্রশাসনের তরফে ডেঙ্গি মোকাবিলা করতে বাড়ি বাড়ি জমা জল পরিদর্শন করা হচ্ছে। ঠিক সেখানে দাঁড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা এই জল কীভাবে নজর এড়িয়ে যাচ্ছে? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
জমা জল না বের হওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে এসেছে সড়ক। যা নিয়ে পূর্ত দপ্তর বা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি তাঁদের ক্ষোভের আঙুল উঠছে স্থানীয় কাউন্সিলারের দিকেও।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল বসাক বলেন, ‘জল বাড়ি পর্যন্ত ঢুকে পড়ছে। বাড়ির সামনে ইট পেতে রেখেছি। হয় এখানে নর্দমার ব্যবস্থা করুক, না হয় এই জমা জল অপরপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হোক। কাউন্সিলারকে জানালে তিনি ওপরমহলে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন।’ রাস্তার ঢাল ঠিক করে অপরপ্রান্তে যে নর্দমা রয়েছে, সেইদিকে জল নিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন আরেক বাসিন্দা বঙ্গরত্ন কবি বিশ্বনাথ লাহা। এই সমস্যার কথা কাউন্সিলারকে বহুবার জানানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কাউন্সিলার সুরজিৎ সাহা। তাঁর বক্তব্য, ‘পুরসভার তরফে পূর্ত দপ্তর ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। তারা এলাকা পরিদর্শনও করে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরে আর কিছু হয়নি। কোন দপ্তর কাজ করবে এই নিয়ে সমস্যা রয়েছে। তবে আমরা ইতিমধ্যেই মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেটের কাছে অর্থ বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছি। যদি পূর্ত ও জাতীয় সড়ক দপ্তর নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেয় তাহলে আমরা কাজ করব।’
বালুরঘাট পুরসভার (Balurghat Municipality) চেয়ারম্যান অশোক মিত্র জানিয়েছেন, পুরসভা থেকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। হয়তো প্রক্রিয়াগত কারণে এখনও তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। বালুরঘাট পূর্ত দপ্তর জানিয়েছে, ওই এলাকায় রাস্তায় জল জমার সমস্যা একটা রয়েছে। তবে এখন প্রক্রিয়া কোন জায়গায় রয়েছে, তা ফাইল না ঘেঁটে তারা বলতে পারবে না। এখন এই প্রক্রিয়া পেরিয়ে সমস্যার সমাধান কবে হবে, তা নিয়ে দিন গুনছেন শহরবাসী।