বালুরঘাট: দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দেহব্যবসা চালিয়ে আসছেন মা ও মেয়ে। স্থানীয়দের এমনটাই অভিযোগ। গত মঙ্গলবার বাইরের ছেলেমেয়েকে হাতেনাতে ধরেছিলেন গ্রামের মহিলারা। তারপর বৃদ্ধা মা ও মেয়েকে গ্রাম ছেড়ে উঠে যেতে বলেছিলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, শনিবার দুপুরে ফের ওই মহিলার বাড়িতে বহিরাগত ছেলেমেয়েদের দেখতে পান স্থানীয়রা। এতেই খেপে ওঠেন স্থানীয়রা। এরপরেই ক্ষুব্ধ মহিলারা জড়ো হয়ে ডাঙ্গা পঞ্চায়েত অফিসের সামনে মেয়ের চায়ের দোকানে চড়াও হন। ভাঙচুর করা হয় দোকান। মহিলাকে দোকান থেকে টেনে বার করে তাঁর মুখে কালি মাখিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। অভিযুক্ত মেয়েকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস বলেন, ‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
বালুরঘাট ব্লকের ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ওই বৃদ্ধার বাড়ি। বাড়ির সামনে চায়ের দোকান চালান মেয়েটি। অভিযোগ, ওই বাড়িতে মা ও মেয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেহব্যবসা চালিয়ে আসছেন৷ প্রায় দিনই বাইরে থেকে নতুন নতুন ছেলেমেয়ে আসে ওই বাড়িতে। বছর খানেক আগেও দেহব্যবসার বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন গ্রামবাসী। সেই সময় মা-মেয়ে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিস্তার পান। এমন কাজ কোনও দিন করবেন না বলে আশ্বাস দেন। গ্রামবাসী সে যাত্রায় তাঁদের শুধরে যাওয়ার জন্য সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের মা ও মেয়ের বিরুদ্ধে দেহব্যবসা চালানোর অভিযোগ ওঠে। গত মঙ্গলবার রাতে ওই বাড়িতে বহিরাগত এক যুগলকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাদের ধরে নিয়ে যায়। শনিবার ফের ওই বাড়িতে বহিরাগত যুগল আসে। বাসিন্দারা টের পেয়ে তাঁদের বাড়িতে প্রথমে চড়াও হন। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ মহিলারা বাড়ির সামনে থাকা দোকানে ভাঙচুর করেন। গ্রামবাসীর বক্তব্য, কোনওরকম ভাবেই তাঁরা মা ও মেয়েকে গ্রামে থাকতে দেবেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা অমিত কর্মকার বলেন, ‘ওই মহিলা ও তার মা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজকর্ম করে আসছে। এর আগে তাদের দু’বার সাবধান করা হয়েছিল। শুধরে নেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা করেনি। যে কারণে গ্রামের মাহিলারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাদের গ্রামে থাকতে দিতে চাইছেন না এলাকাবাসী।’
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়েটি। তাঁর বক্তব্য, ‘গ্রামের লোক আমাদের থাকতে দিতে চাইছে না। তাহলে আমরা কোথায় যাব। আর গ্রামবাসী যেভাবে বলছে আমরা বাড়িতে দেহব্যবসা চালাই। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। ওরা আমাদের বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করেছে। আমার মায়ের মাথায় আঘাত করেছে। আমাদের প্রতি ওদের কী কারণে আক্রোশ তা আমরা বুঝতে পারছি না।’ স্থানীয় ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কৌশিক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। ঠিক কী ঘটেছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’