সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: মদ্যপ প্রেমিকের বাড়িতে যেতে রাজি হয়নি দিদি। জোর করে টোটোতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে সেই প্রেমিক বেধড়ক মারধর শুরু করে দিদিকে। বেগতিক দেখে তার হাত থেকে দিদিকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে দিদিকে ছেড়ে তার ছোট বোনকেই তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই প্রেমিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই চেষ্টাতেও ব্যর্থ হয়ে রাস্তাতেই বোনের শ্লীলতাহানি করে দিদির প্রেমিক। এমনকি তার মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। এদিন শহরের রাস্তাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাস বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এমনভাবে দুই তরুণীর উপরে আক্রমণের ঘটনায় পথচারীরা কিছুটা অবাক হয়ে গেলেও পারিবারিক বিবাদ মনে করে কেউই তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। বালুরঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই তরুণীকে উদ্ধার করে বালুরঘাট থানায় নিয়ে আসে। তবে ততক্ষণে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্ত। ছোট বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে বালুরঘাট থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বালুরঘাট শহরের চকভৃগু আখিড়াপাড়ার এমন ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
পতিরাম থানা এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৪-এর ওই তরুণী তাঁর স্বামীকে ছেড়ে বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকার এক তরুণের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে ওই তরুণী তাঁর প্রেমিককে ছেড়ে বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। ওই প্রেমিকের পরিবারের সঙ্গে তাঁর বনিবনা না হওয়ায় প্রেমিকের বাড়িতে আর ফিরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন ওই তরুণী। এনিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁদের গোলমাল চলছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন নিজের ছোট বোনকে নিয়ে এর হেস্তনেস্ত করতেই চকভৃগু এলাকায় এসেছিলেন ওই তরুণী। এদিকে, তাঁর প্রেমিকও টোটোয় চেপে ওই এলাকায় আসে। প্রকাশ্য রাস্তাতেই শুরু হয় বচসা। তারপরই ওই তরুণীকে পেটাতে পেটাতে জোর করে টোটোতে চাপিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে প্রেমিক। অভিযোগ, তরুণীর বোন দিদিকে বাঁচাতে গেলে দিদিকে ছেড়ে বোনকেই তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই তরুণ। ওই সময় বোনের শ্লীলতাহানি করা হয়।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী এক গৃহবধূ বলেন, ওদের মধ্যে পারিবারিক গোলমাল চলছে বলে ওই তরুণীরাই জানিয়েছিলেন। তাই আমরা দেখা ছাড়া কিছু করতে পারিনি। ফলে পথচলতি লোকজন তরুণীদের সাহায্যে এগিয়ে আসেননি।
এদিন বালুরঘাট থানায় দাঁড়িয়ে ছোট বোন বলেন, ‘দিদির প্রেমিক মদ খেয়ে এসে আমাদের উপরে চরম অত্যাচার করেছে। প্রকাশ্য রাস্তায় দিদি ও আমাকে মেরেছে। আমার শ্লীলতাহানি করেছে। আমার মোবাইল ফোন ভেঙেছে। আমাদের কাছে থাকা কিছু টাকাও নিয়ে পালিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’