সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: শিক্ষকদের যোগ্য-অযোগ্য বিতর্ক নতুন মোড় নিল বালুরঘাটে। চাকরি যে শুধু সাধারণ মানুষের গিয়েছে, তাই নয়। চাকরি হারিয়েছেন বালুরঘাট শহরের তৃণমূল কাউন্সিলার দীপান্বিতা দেব সিংহ। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছেন বিরোধীরা। এই নিয়ে শুক্রবার থেকেই আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
সুকান্ত মজুমদার-অশোক লাহিড়ির শহরে এই ‘নয়া অস্ত্র’কে ব্যবহার করতে পদ্ম নেতারা মরিয়া। দীপান্বিতার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে পথে নামতে চলেছে বিরোধীরা। বিজেপি শহর সভাপতি সমীরপ্রসাদ দত্তের দাবি, ‘বছর দুয়েক আগেই ওই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে এলাকায় পোস্টার ও পুরসভা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি চালিয়েছি। কিন্তু তখন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় ছিলাম বলে ওই আন্দোলন থেকে সরে গিয়েছি। কিন্তু এবারে তিনি যে রীতিমতো টাকা দিয়ে চাকরি নিয়েছেন, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাই এই ভুয়ো শিক্ষিকাকে আমরা ভুয়ো কাউন্সিলার হিসেবেই মনে করছি। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে নামব।’
চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে সংখ্যাটি প্রায় ৬০০ জন বলে সূত্রের খবর। এর মধ্যেই রয়েছে বালুরঘাট শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার দীপান্বিতা দেব সিংহ। তিনি বালুরঘাট শহরের প্রাচ্য ভারতী হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষিকা ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চাকরি খোয়ানোর খবর তিনি স্কুলেই শুনেছেন এবং দুপুর পর্যন্ত তাঁকে সেখানেই মুষড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। স্কুলের একটি ফাঁকা ক্লাসরুমে একাই বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল দীপান্বিতা দেব সিংহকে। কিন্তু এদিন তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। স্কুলে তো তিনি যাননি, এমনকি পুরসভাতেও পা রাখেননি। বাড়িতে গেলেও তাঁর আত্মীয়রা তিনি বাড়িতে নেই বলে জানিয়ে দেন। ফোনেও সাড়া মেলেনি।
গতকাল দীপান্বিতা দেব সিংহ বলেছিলেন, ‘আমি শুধু আমার কথা ভাবছি না। যাদের চাকরি গেল, তাদের সকলের জন্যই কষ্ট হচ্ছে। আশা করি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চয়ই এর কোনও সমাধান করবেন। ওঁর উপরে আমাদের ভরসা আছে।’
এদিন দীপান্বিতা দেবীর শিক্ষক স্বামী রঞ্জন সেন ফোনে জানান, ‘আমার স্ত্রী যোগ্যই ছিলেন। কিন্তু এভাবে চাকরি খুইয়ে বিধ্বস্ত। দলের সকলেই খোঁজখবর নিচ্ছেন। আগামী ৭ই এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় যে বৈঠক ডেকেছেন সেখানে যাবে কি না তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আরএসপি নেতা প্রলয় ঘোষ বলেন, ‘উনি অসৎ পদ্ধতিতে ওই চাকরি নিয়েছিলেন। তাই নৈতিকভাবেই কাউন্সিলারের পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত।’