উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ফের একবার ইতিহাসের সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে নেপাল (Nepal)। জেন জি দের বিক্ষোভে টলে গিয়েছে সেদেশের সরকার। সোমবার সকাল থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামে। এর নেপথ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানোর কথা বলা হলেও বিক্ষোভকারীরা মূলত দেশব্যাপী দুর্নীতি ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। সরকার প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ১৯ জনের মৃত্যু হয়। জখম হয়েছেন অন্তত ৩০০। উত্তাল পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি (KP Sharma Oli)। আরও একাধিক মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন বলে খবর। অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। আগুন ধরানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। মন্ত্রী-প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের খুঁজে বের করে মারধর করছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের তরফে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শা বা বলেনের নাম (Balendra Shah)।
২৮ বছরের বয়সসীমার কারণে এই বিক্ষোভে নিজে যোগ দেননি কাঠমান্ডুর ৩৩ বছর বয়সি মেয়র বলেন্দ্র শা। কিন্তু মুক্তকন্ঠে এক ফেসবুক পোস্টে আন্দোলনের প্রতি জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমার পূর্ণ সহানুভূতি রয়েছে তরুণদের সঙ্গে।’ একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থে আন্দোলনকে কাজে না লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথা তরুণ নেপালিদের মনে দাগ কেটেছে, যাদের অনেকেই তাঁকে দেশের প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বের রাজনৈতিক বিকল্প হিসেবে দেখতে চাইছেন।
একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হলেও বলেন্দ্র শা একজন র্যাপ শিল্পী। ২০২২ সালে নির্দল প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র পদে প্রতিষ্ঠিত সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের পেছনে ফেলে জয়লাভ করেন তিনি। তারপর থেকে দুর্নীতি বিরোধী মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। দুর্নীতির প্রতি জিরো টলারেন্স, শহরের রাস্তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশেষ উদ্যোগ, সরকারি স্কুলের উন্নতি এবং কর ফাঁকি দেওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সংস্কার শুরু করার জন্য তিনি বিশেষ জনপ্রিয়। আন্তর্জাতিক স্তরেও নজর কেড়েছেন এই তরুণ রাজনীতিক। ‘টাইম ম্যাগাজিন’ তাঁকে শীর্ষ ১০০ উদীয়মান নেতার তালিকায় স্থান দিয়েছে, অন্যদিকে ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ তাঁর স্বচ্ছতা এবং তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতির প্রশংসা করেছে।