রাহুল দেব ও বরুণকুমার মজুমদার, রায়গঞ্জ ও ডালখোলা: সরকারি টাকা পেয়েও যে উপভোক্তারা এখনও বাড়ি তৈরি করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে এবার কড়া আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সুডা)। শনিবার দুই দিনাজপুর ও মালদা জেলার ৯টি পুরসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে রায়গঞ্জের মোহরকুঞ্জে একটি বিশেষ বৈঠক ও প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে এসেছিলেন সুডার ডিরেক্টর জলি চৌধুরী ও অন্য আধিকারিকরা। সেখানেই সুডার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখনও প্রায় ১২০০ উপভোক্তা রয়েছেন যাঁরা ‘হাউজিং ফর অল’ প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন, কিন্তু এখনও বাড়ি তৈরি করেননি। সরকারের তরফে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। যদি তাঁরা বাড়ির কাজ সম্পূর্ণ না করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন দুপুরে রায়গঞ্জের মোহরকুঞ্জে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই মন্তব্য করেন সুডার ডিরেক্টর জলি চৌধুরী। এদিনের বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুডার পক্ষ থেকে বরুণ হালদার, করবী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
মূলত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও হাউজিং ফর অল বিষয়ে প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়। সুডা সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে গৌড়বঙ্গের ৯টি পুরসভার অধীনে প্রায় আট হাজার বাড়ির কাজ চলছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১২০০ বাড়ির উপভোক্তা টাকা তুলে নিলেও বাড়ির কাজ কিছুই করেননি। সুডা ডিরেক্টর জলি চৌধুরী বলেন, ‘এরকম বেশ কিছু ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। ব্যবস্থা নিতে হলে কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।’ কী সেই প্রক্রিয়া? ডিরেক্টর বলেন, ‘এক্ষেত্রে প্রথমে ১৫ দিনের মধ্যে বাড়ির কাজ সম্পন্ন করার জন্য উপভোক্তাকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়। তাতে কাজ না হলে ৭ দিনের মধ্যে সেই কাজ সম্পন্ন করার আরও একটি নির্দেশিকা যাবে। তারপরেও কাজ না হলে উপভোক্তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়।’ বাড়ি না বানানো ১২০০ উপভোক্তার বিরুদ্ধে সুডার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, আগামী দুই মাসের মধ্যে হয় আইনি পদক্ষেপ করা হবে, নয়তো টাকা ফেরত দিতে হবে।
কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়েও বিশেষ কিছু পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে সুডা। তাদের দাবি, আগামীদিনে কোনও পুর এলাকাতেই ভাগাড় দেখা যাবে না। পরিবর্তে সেই জায়গায় তৈরি হবে কারখানা। মূলত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভেজা ও শুকনো বর্জ্যকে আলাদা করে প্ল্যান্টের মাধ্যমে সেগুলোকে প্রসেস করা হবে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত পুরসভা এলাকায় এই প্ল্যান্ট চালু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জলি চৌধুরী।
এদিন রায়গঞ্জের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আগে ডালখোলা পুরসভাতেও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন সুডার প্রতিনিধিরা। ডালখোলা পুরসভার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প দ্রুত রূপায়ণ করতে নির্দেশ দেন সুডা কর্তা। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঢিলছোড়া দূরত্বে ডালখোলা পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডেই ৪ কোটি ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও কাজ শুরু হয়নি। এদিন সুডার ডিরেক্টর জলি চৌধুরী ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ড পরিদর্শন করে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পরে পুর চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করেন সংস্থার কর্তা৷