শিলিগুড়ি: মঙ্গলবার রাতে লোকনাথ বাজারে এটিএম লুটের ঘটনায় বাজলই না অ্যালার্ম। পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে ব্যাংকগুলোকে অ্যালার্ম বাধ্যতামূলক করার কথা একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরও যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাতে কান দেয়নি, লোকনাথ বাজারের ঘটনাতেই তা প্রমাণিত। এনিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওই এটিএমের দায়িত্বে থাকা এজেন্সির এক কর্তার দাবি, ‘আসলে অ্যালার্ট দেখার দায়িত্বে থাকা কর্মী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। সেই কারণেই অ্যালার্টের বিষয়টা কেউ দেখেননি।’ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন।
বেঙ্গল প্রভিনসিয়াল ব্যাংক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট কমিটির সম্পাদক লক্ষ্মী মাহাতো বলছেন, ‘আমরা বিষয়টা নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে যাব। কমিশনারের কাছে অনুরোধ করব, যাতে প্রতিটি এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষী রাখার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়।’
বিষয়টা নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের অন্দরেও ক্ষোভ বাড়ছে। পুলিশের প্রশ্ন, এটিএমগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব কি শুধু তাদেরই? ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোর কোনও দায় নেই? পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘এটিএম চুরির পরেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। যেন আমাদেরই সব দায়িত্ব। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যন্ত তারা দিচ্ছে না।’
মাসখানেক আগে চম্পাসারিতে এটিএম লুটের পরেও একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন প্রধাননগর থানার আইসি বাসুদেব সরকার। তিনি বলেছিলেন, ‘অভিযোগ দায়ের করতে পর্যন্ত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ তো দূরের ব্যাপার।’ এত কিছুর পরও অ্যালার্ম না বাজার ঘটনা সেই ক্ষোভে আরও ঘি ঢালতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসিপি (ইস্ট) রাকেশ সিংয়ের বক্তব্য, ‘এটিএমের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এরপরেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা গেল, অ্যালার্ম বাজল না। অ্যালার্মের কোনও ব্যবস্থাই নেই। আমরা বিষয়টা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো অ্যালার্ম, নিরাপত্তারক্ষীর ওপর নজর দিলেও নির্দিষ্ট একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এক্ষেত্রে কোনও ভ্রূক্ষেপই নেই। এটিএম লুটের সঙ্গে জড়িত গ্যাংয়ের সদস্যদেরও এই বিষয়টা খুবই ভালো করে জানা রয়েছে। তাই তারাও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ওই ব্যাংকের এটিএমকেই টার্গেট করছে। লক্ষ্মীবাবুর বক্তব্য, ‘তাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোর কোনও কিছু যায় আসে না। নিরাপত্তা খাতে খরচের পক্ষপাতী নয় ব্যাংকগুলো।’