উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় ইজরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার বোমাবর্ষণে (Assault On Gaza) মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৪১৩। জখম ১৫০ জন। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক। হামাস (Hamas) পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, যে নিহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু। হামাস এক বিবৃতিতে দাবি করেছে যে হতাহতের মধ্যে হামাস প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা ও একজন ইসরায়েলি (Israel) পণবন্দিও রয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধ বিরতি চালু হওয়ার পর এটাই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা বলে জানা গেছে। প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ফুরিয়েছে ১ মার্চ। দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আলোচনা হয়নি দুই পক্ষের। ইজ়রায়েল ইতিমধ্যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য হামাস গোষ্ঠীর উপর চাপ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। কখনও গাজ়ায় ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করেছে, কখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছে। এ বার গাজ়ায় নতুন করে হামলাও শুরু করে দিল ইজ়রায়েলি সেনা।
প্রতি মুহূর্তেই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এদিন উত্তর গাজা, গাজা সিটি এবং মধ্য ও দক্ষিণ গাজা স্ট্রিপের দেইর আল-বালাহ, খান ইউনিস এবং রাফাহ সহ একাধিক স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। গাজা স্ট্রিপে হামাসের পুলিশ এবং অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা পরিষেবার প্রধান মাহমুদ আবু ওয়াতফাও গাজা সিটিতে হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার সকালেই ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর তরফে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে হামলার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হামলার কয়েক ঘণ্টা পর, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) বলেন, ‘যে গাজায় হামাসের হাতে আটক পণবন্দিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি এবং যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়ায় তিনি সেনাবাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’ নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে ইঙ্গিত স্পষ্ট যে, ইসরায়েল এখন থেকে প্রবল সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এই হামলার পর থেকে গাজায় হামাসের হাতে আটক ৫৯ জন পণবন্দির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, যে তারা কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে এবং যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ আক্রমণ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বিমান হামলার বাইরেও হামলার পরিধি বিস্তৃত হবে, যার ফলে ইসরায়েলি স্থল সেনারা আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে বলে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিরাপত্তা পর্যালোচনার জন্য কিরিয়ায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ১৫ মাসের যুদ্ধে গাজা উপত্যকা বহুলাংশে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের হিসেব অনুসারে এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়, এবং ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় পালটা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুসারে, এই হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বেশির ভাগ বাড়িঘর ও পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।