রাজা বন্দ্যোপাধ্যয়, আসানসোল: ভুয়ো বা নকল আধার, ভোটার কার্ড তৈরিতে এবার নাম জড়াল আসানসোল (Asansol) শিল্পাঞ্চলের। তবে শুধু আধার বা ভোটার কার্ডই নয়, পাসপোর্ট ও প্যান কার্ড তৈরিরও চক্র গজিয়ে উঠেছে এই আসানসোলেই। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল ফোর্স অভিযান চালাতেই এই চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। উঠে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত শনিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আসানসোল ও বারাবনিতে একটি অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। ধরা পড়ে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত আসানসোলের ২ জন। তাদের একজন আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুরে একটি আধার সেন্টারে কর্মী হিসেবে কাজ করে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই চক্র ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পেলেই নকল ভারতীয় নথি বানিয়ে দিতো। দেশবিরোধী কাজে এই চক্রের কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে এনিয়ে কিছু বলতে চাননি দিল্লি বা আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অফিসাররা। রবিবার এক অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যেতে আসানসোল আদালতে এসেছিল দিল্লি পুলিশের একটি দল।
শনিবার দুপুরে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল টিমের একটি দল আসে বারাবনিতে। সৌরভ বাউরি নামে এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালান তারা। তাকে তুলে নিয়ে যেতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয় দিল্লি পুলিশকে। তখন ঘটনাস্থলে আসে বারাবনি থানার পুলিশ। দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়, সৌরভ ভুয়ো নথি তৈরি চক্রের সঙ্গে যুক্ত। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে বারাবনি থানাতে নিয়ে যায় পুলিশ।
সম্প্রতি ভারতীয় জাল নথি সহ দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছিল দিল্লি পুলিশ। কারা সেই নথি তৈরি করে দিল, তার তদন্ত করতে গিয়েই দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই চক্রের হদিস মেলে। তদন্তকারী অফিসাররা প্রথমে গ্রেপ্তার করে আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের বাসিন্দা সারফারজ আলমকে। তাকে নিয়ে শনিবার আসানসোলে আসে দিল্লি পুলিশ। স্থানীয় পুলিশকে জানিয়ে তার বাড়িতে দিনভর তল্লাশি চলে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সূত্র পেয়ে তারা হানা দেয় সৌরভ বাউরির বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে খবর, আধার কার্ড সহ যে কোনো পরিচয়পত্র তৈরির ক্ষেত্রে সৌরভ পারদর্শী। প্রায়দিনই বাইরে থেকে লোক তার বাড়িতে আসত। চার বছর ধরে আসানসোলের আধার সেন্টারে সে কাজ করছে। বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করানো থেকে নকল নথি বানিয়ে দেওয়া সহ সব কাজই করতো এই চক্রটি। যার কেন্দ্রস্থল আসানসোল। বলা হয়েছে, এখান থেকে নাকি সব নকল নথি বানিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশিরা, এমনটাই সন্দেহ দিল্লি পুলিশের। ঘটনায় শোরগোল পড়েছে গোটা আসানসোল শিল্পাঞ্চলজুড়ে।