Alipurduar | শেষবেলায় যেন সেলের ‘ফাঁদ’ পাতা ভুবনে

Alipurduar | শেষবেলায় যেন সেলের ‘ফাঁদ’ পাতা ভুবনে

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


আলিপুরদুয়ার ও ফালাকাটা: সাউন্ডবক্সে ভেসে আসছে ‘সেল সেল সেল’ ও ‘এক দম সস্তা একদম সস্তা’। রবিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ার শহরের চৌপথি এলাকায় সেলের সেই অমোঘ ডাকের কাছে চাপা পড়ে যাচ্ছিল গাড়ির হর্নের শব্দও।

ফুটপাথে ঢালাও দোকান লাগিয়ে সেলের ‘টোপ’ দিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সেসব স্টলে ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল নজরে পড়ার মতো। আবার চৈত্র সেলের বাজার ধরতে কাপড়ের বড় দোকানগুলোও দোকানের সামনে এমনভাবে পসরা সাজিয়েছে, যেন আরেকটি করে অস্থায়ী দোকান। প্রদীপ দত্ত নামে চৌপথি এলাকার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘বাজারে যে প্রতিযোগিতা সেটা ধরতে হলে সেল দিতে হবে। আর ফুটপাথেও দোকান লাগাতে হবে।’

চৌপথি থেকে যে রাস্তাটা সোজা মাড়োয়ারিপট্টির দিকে চলে যাচ্ছে, তার দু’দিকে যে কাপড়ের দোকান আর জুতোর দোকানগুলো রয়েছে, দুপুর থেকেই সেখানেও ভালো ভিড়। বিকেলের পর সেই ভিড় আরও বেড়েছে। ভরদুপুরেই মাড়োয়ারিপট্টির এক কাপড়ের দোকানের বাইরে দেখা হল বড়চৌকি থেকে আসা মানসী বর্মনের সঙ্গে। দুই হাতে কাপড়ের প্যাকেট দেখা বোঝা যাচ্ছিল, তাঁর বাজার করা প্রায় শেষ। বললেন, ‘যখন আলিপুরদুয়ারে আসি তখন দোকানগুলো খুলতে শুরু করেছে। তাড়াতাড়ি কেনাকাটা সেরে ফেললাম। দুপুরের চড়া রোদে তো বেশিক্ষণ ঘোরাফেরা করা যায় না।’

তবে সবাই মানসীর মতো নন। বিশেষ করে শহরের বাসিন্দারা কেনাকাটা করতে বেরিয়েছেন বিকেল-সন্ধ্যায়। মাড়োয়ারিপট্টিতে এক শাড়ির দোকানে দেখা হল সারংপট্টির বাসিন্দা কণিকা ঘোষের সঙ্গে। জানালেন, শেষের দিকে ভিড় হবে ভেবে তাঁদের পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা আগেই শেষ। এদিন শুধু বাড়ির একজনের শাড়ি কিনতে এসেছিলেন।

রবিবারে ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করেছিলেন শহরের ব্যবসায়ীরাও। সকালে বৃষ্টি দেখে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। পরে ঝলমলে রোদ সেই আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। বাটা মোড় এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী প্রভাত সাহার দোকান সংলগ্ন লম্বা গলিতে বেশ কয়েকজন খদ্দের দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই প্রভাত বলছিলেন, ‘সকালে বৃষ্টি দেখে ভেবেছিলাম বাজার মনে হয় পণ্ড হল। সেটা যদিও হয়নি।’ ব্যবসায়ীদের মুখে শোনা গেল, শাড়ি, সালোয়ার থেকে প্যান্ট শার্ট, বিছানার চাদর সবকিছুই বিক্রি হয়েছে সেলের বাজারে।

আবার শপিং মলগুলোর বাইরে ভিড়ের ছবিটাও একইরকম। সন্ধ্যায় চৌপথির এক মলের বাইরে দেখা গেল, পার্কিং নিয়ে হুড়োহুড়ি। জায়গা না পেয়ে অনেকেই দূরে বাইক বা গাড়ি দাঁড় করিয়ে কেনাকাটা করতে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে ব্যবসা যে ভালোই, মেনে নিলেন প্রণব সাহার মতো দোকানদাররা।

ফালাকাটার নেতাজি রোড, হাটখোলার ব্যবসায়ীদের মুখেও চওড়া হাসি। কাপড়ের দোকান থেকে জুতোর দোকান এমনকি সোনার দোকানেও কেনাকাটায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। ভিড়ও হচ্ছে সেই ছাড়ের টানে। চৈত্র সেলের বাজার সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয় নেতাজি রোডে। স্থায়ী দোকানগুলির পাশাপাশি চৈত্র সেল উপলক্ষ্যে সেখানে প্রচুর অস্থায়ী দোকানও বসেছিল। ফালাকাটা বাদেও মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া থেকেও প্রচুর ব্যবসায়ী জামাকাপড়ের অস্থায়ী দোকান দিয়েছিলেন। স্থায়ী দোকানগুলির তুলনায় বাইরে থেকে আসা সেইসব ব্যবসায়ীরই ভালো ব্যবসা হয়েছে, বলছেন নেতাজি রোডের রেডিমেড বস্ত্র বিক্রেতা পবন সূত্রধরের মতো শহরের ব্যবসায়ীরা। আর মুর্শিদাবাদ থেকে আসা বস্ত্র ব্যবসায়ী সিরাজ সরকার তো বেশ খুশি। জানালেন, আগামী বছর আবার আসবেন।

শিশাগোড় থেকে আসা মামণি রায় বা ফালাকাটা শহরের বাসিন্দা লগ্নজিতা বিশ্বাস, সকলেরই এক কথা, দামে কম মানে ভালো বলেই তঁাদের ভরসা ফালাকাটার চৈত্র সেলের বাজার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *