Alipurduar | মোষ পাচারের টাকায় কোটি টাকার সাম্রাজ্য

Alipurduar | মোষ পাচারের টাকায় কোটি টাকার সাম্রাজ্য

ব্লগ/BLOG
Spread the love


আলিপুরদুয়ার ব্যুরো: কয়েক বছর আগেকার কথা। এক ভাই ছিল তাঁতশিল্পী। আরেক ভাই পেশায় ছিল মোটরবাইক মেকানিক। এখন সেই দুই ভাইয়ের বালি-পাথরের ব্যবসায় খাটছে কোটি কোটি টাকা। সম্প্রতি মোষ পাচারের কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বারবিশার বাসিন্দা কৃষ্ণ সাহা ও বলরাম সাহাকে। তাদের বালি-পাথরের কারবারে যে মোটা টাকা খাটছে, তার জোগান কি এসেছে মোষ পাচারের অবৈধ কারবার থেকেই? দুই ভাইয়ের গ্রেপ্তারির পর এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বারবিশাজুড়ে।

শুধু মোষ পাচারই নয়, দুই ভাই কৃষ্ণ এবং বলরামের নাম জড়িয়েছে আরও নানা অবৈধ কারবারে। সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের দুই ভাই একাধিক অবৈধ কারবারে নাম লেখানোয় গত কয়েক বছরে তাদের আঙুল ফুলে কলা গাছ। অসম-বাংলা সীমানায় রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার ভল্কা বারবিশা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানকার উত্তর পাকরিগুড়ির বাসিন্দা কৃষ্ণ একটা সময় নদিয়ার ফুলিয়ায় তাঁত কারখানায় কাজ করত। সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পর বাড়ি ফিরে আসে। ভাগ্য পরিবর্তনে গ্রামের কয়েকজনের মতো কাঠের চোরাকারবারকেই বেছে নিয়েছিল প্রথমে। কাঁচা পয়সা হাতে আসতে শুরু করে। এসব দেখে অসমের শিমুলটাপুতে মোটরবাইক সারাইয়ের দোকান গুটিয়ে দাদার কারবারে যোগ দেয় ভাই বলরাম।

এলাকাবাসীরা দুই ভাইকেই যথেষ্ট ভয় পায়। চট করে মুখ খুলতে চাইছে না। তবুও যেটুকু কানাঘুষো শোনা গেল, এসব কারবারে বড় ভাইয়ের বুদ্ধিই নাকি বেশি। ভাগ্যের চাকা দ্রুতগতিতে ঘুরতে শুরু করে কৃষ্ণর এক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পর। বিজেপি ছেড়ে সে তৃণমূলে নাম লেখানোর পরপরই খুলে যায় একের পর এক অবৈধ কারবারের দরজা। মোষ, গোরু, পোলট্রি মুরগি- যখন যেভাবে যে কারবারে হাত লাগানোর সুযোগ পেয়েছে, তাকেই কাজে লাগিয়েছে কৃষ্ণ। গত এক দশকের কিছু বেশি সময়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছে। দাদার এমন রমরমা দেখে একই পথে হেঁটেছে ভাই বলরাম। দেখতে দেখতে দুই ভাইয়ের চলনবলন বদলে গিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাদের ওঠাবসা, পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক এবং কর্মীদের সঙ্গে সখ্য দেখে ঘাবড়ে গিয়েছে পাড়া-প্রতিবেশীরাও।

গ্রামবাসীদের একাংশের কথায়, দেড় দশক আগেও কৃষ্ণ-বলরামদের কাঁচা বাড়ি ছিল। এখন ইটের পাকা ঘরে বসেছে এসি। সাইকেল ছেড়ে দুই ভাইয়ের এখন আলাদা আলাদা বিলাসবহুল ছোট গাড়ি রয়েছে। নামীদামি কোম্পানির বাইক দাবড়ে এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। সেইসঙ্গে গলায় মোটা সোনার চেন, হাতে আংটি।

বাড়ির কাছেই রয়েছে স্টোন ক্র্যাশার মেশিনের অংশীদারি ব্যবসা। দুই ভাই ৪-৫টি পকলিনের মালিকও বটে। একেকটা পেকলিনের দাম লাখ ত্রিশেক। এছাড়াও নদী থেকে বালি-পাথর খনন এবং তোলার কাজে লিজে নেওয়া আছে একাধিক আর্থমুভার। তার সংখ্যা অবশ্য নির্ভর করে বালি-পাথর সরবরাহের বরাত পাওয়ার ওপর। অর্ডার বেশি পেলে সেই মতো ভাড়ায় মেশিনপত্র জোগাড় করে নিত দুই ভাই। লিজ এবং ভাড়া নেওয়া ডাম্পারে বালি-পাথর পরিবহণও রমরমিয়ে চলছে সোজা এবং বাঁকা পথে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে শাসকদলের খাতায় নাম লেখানোর পর, বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *