আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার শহরের প্রধানমন্ত্রীর সভার পর সবথেকে বেশি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে, তার মধ্যে অন্যতম হল প্যারেড গ্রাউন্ডের বেহাল দশা ও তার সংস্কার। গত বৃহস্পতিবার মোদির সভার পর এই মাঠ সংস্কার নিয়ে জেলার রাজনীতিও সরগরম হয়েছে। সেই রাজনীতির পারদ যেন আরও কয়েক ধাপ চড়ল মঙ্গলবার। এদিন তৃণমূলের এক ঝাঁক জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে জেলা শাসক আর বিমলা, পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী একসঙ্গে প্যারেড গ্রাউন্ড পরির্দশনে যান। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন। তারপর বেরিয়ে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী সভা করলেও মাঠ সংস্কারের দায় বিজেপি নিচ্ছে না। তাই জেলা প্রশাসনই মাঠের সংস্কার করবে। সেই কথায় কার্যত সায় দিচ্ছে বিজেপি। বিজেপির নেতারা বলছেন, সভার পর মাঠ সংস্কার করা জেলা প্রশাসনেরই দায়িত্ব। দলের জেলা সভাপতি মিঠু দাস জানিয়েছেন, প্রশাসন যাতে দ্রুত সংস্কারের কাজ করে, সেজন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এদিন মাঠ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল, জেলা পরিষদের মেন্টর মৃদুল গোস্বামী, পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর, প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী সহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। এদিন বৈঠক সেরে ডুয়ার্সকন্যা থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের মেন্টর মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘বিজেপির নেতারা মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। তাই জেলা প্রশাসন এগিয়ে এসেছে।’
বিজেপির নেতারা কী বলছেন? বিজেপি নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা পালটা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভার আয়োজন করার জন্য পিএমও থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি এসেছে। জেলা প্রশাসন সব আয়োজনের দেখভাল করেছে। নিয়মমতো মাঠকে আগের অবস্থায় ফেরানোর কাজও তাদেরই।’
এদিন ডুয়ার্সকন্যার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্যারেড গ্রাউন্ডকে আগের অবস্থায় ফেরানোর জন্য ধাপে ধাপে উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রথমে ওই মাঠ পরিষ্কার করা হবে। মাঠে পড়ে থাকা আবর্জনা সরাবে আলিপুরদুয়ার পুরসভা। এছাড়া প্যারেড গ্রাউন্ডের যে লোহার রেলিংগুলো খোলা হয়েছিল, সেগুলো ঠিক করা হবে। মাঠের বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা জল বের করা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর জন্য যে তিনটি হেলিপ্যাড করা হয়েছিল, সেখানে সব থেকে বেশি জল জমে রয়েছে। মাঠের পশ্চিম দিকে যে পেভার্স ব্লকের রাস্তা করা হয়েছে, সেখানেও জল জমে রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর এদিন বলেন, ‘জমা জল থেকে ডেঙ্গি হতে পারে। সেই কারণে জল বের করতে হবে।’
আপাতত মাঠ পরিষ্কার করা হলেও ওই পেভার্স ব্লকের রাস্তা তোলা হবে কি না, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। বর্ষার আগে সেই কাজের সম্ভাবনা কম।
এদিনই আলিপুরদুয়ার প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়ে মাঠের হাল ফেরানোর দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের সম্পাদক ল্যারি বসু বলেন, ‘মাঠে হাঁটাচলা করা যাচ্ছে না। শরীরচর্চা করা যাচ্ছে না। তাই সমস্যা মেটানোর দাবিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’