হাসিমারা: কখনও পড়াশোনা নিয়ে বকুনি খেতে হয়, কখনও আবার টেলিভিশনে রিয়েলিটি শো দেখতে গিয়ে। কথায় কথায় বাবা-মায়ের কাছে এমন বকুনি খেতে আর ভালো লাগে না! এইটুকু স্বাধীনতাও কি তাদের নেই? মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে বাড়ি ছাড়ে অসমের দুই কিশোরী। অসম থেকে ট্রেনে চেপে শনিবার সন্ধ্যায় তারা পৌঁছে যায় আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা রেলস্টেশনে। সেখানে আরপিএফ তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়ার পর যদিও দুই কিশোরী অভিভাবকদের বিরুদ্ধে এভাবেই নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেয়।
দুই কিশোরীকে আলিপুরদুয়ার চাইল্ডলাইনে সেদিন রাতেই পৌঁছে দেওয়া হয়। হাসিমারা ফাঁড়ির পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়। খবর দেওয়া হয়েছে আলিপুরদুয়ার জিআরপিতেও। বাড়ি ছেড়ে পালানো দুই কিশোরীর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এদিন আলিপুরদুয়ার আসেন মেয়েদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে।
হাসিমারা রেলস্টেশন আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় আরপিএফের হাসিমারার ইনস্পেকটর রুনু বর্মন এবং দুজন কর্মী প্রদীপ ওরাওঁ ও রাজ কুমার স্টেশন এলাকায় রুটিন টহলদারি চালাচ্ছিলেন। সেসময় দুই আরপিএফ কর্মী স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার আসনের পেছনে লুকিয়ে থাকা দুই কিশোরীকে দেখতে পান। তাদের মধ্যে আরুষমার বয়স ১৫ বছর, আরেক কিশোরী ইয়ামিনের বয়স ১৬। উর্দিধারীদের দেখে দুই কিশোরী প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। তারপর তাদের আরপিএফের কার্যালয়ে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, তাদের বাড়ি অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলায়। বাবা-মায়ের প্রতিনিয়ত বকুনিতে অতিষ্ঠ হয়ে তারা বাড়ি থেকে পালানোর পরিকল্পনা করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি তারা বাড়ি থেকে বের হয়। বঙ্গাইগাঁও স্টেশন থেকে প্যাসেঞ্জার ট্রেনে চড়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি হাসিমারা স্টেশনে নামে। এরপর কোথায় যাবে, কী করবে, তা ভাবতে ভাবতেই দুজন ‘পুলিশকাকুর’ নজরে চলে আসায় তাদের আর পালানো হয় না। হাসিমারা আরপিএফ ইনস্পেকটর রুনু বর্মন রবিবার বলেন, ‘দুই কিশোরীর পরিবারকে খবর দেওয়ার পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার চাইল্ডলাইনে দুজনকে পাঠানো হয়েছে। দুই কিশোরীকে বোঝানো হয়েছে, যাতে এভাবে তারা আর বাড়ি ছেড়ে চলে না যায়।’