প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: বুধবার অভিভাবকহীন দুই শিশুকন্যা সহ ৫টি শিশুর অন্নপ্রাশনের আয়োজন করল শিশু সুরক্ষা দপ্তর ও সিডব্লিউসি। মাথায় ধান, দুর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করে শঙ্খ বাজিয়ে পুরোহিতের কোলে বসে তাঁর হাতে প্রথম ভাত খেল ঝনক, মমতা ও আরিয়ানরা। ওদের সকলের বয়স আট মাস থেকে এক বছরের মধ্যে। সেই উপলক্ষ্যে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) স্পেশাল অ্যাডপশন এজেন্সির (সা) অফিসে বুধবার সাজোসাজো রব ছিল।
এদিন সকাল থেকে অন্নপ্রাশনের তোড়জোড় চলছিল। অফিস চত্বর বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। অতিথিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়। শিশুদের স্নান করিয়ে নতুন পোশাক পরানো হয়। তারপর তাদের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে, মাথায় টোপর পরিয়ে গলায় ফুলের মালা পরানো হয়। এরপর শান্তিজল, নারায়ণ স্তুতি পাঠ, গীতা, গঙ্গা মাটি, কলম ও ধান হাতে ছোঁয়ানোর পর শিশুদের পরমান্ন খাওয়ানো হয়। খাওয়াদাওয়ার আয়োজন বেশ ভালোই ছিল। মাছের মুড়ো, ভাত, ডাল, ভাজা, দই ও মিষ্টির আয়োজন করা হয়েছিল।
এই অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলিপুরদুয়ার মহকুমা শাসক দেবব্রত রায়, জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক লালকমল চক্রবর্তী, সিডব্লিউসি-র চেয়ারম্যান অসীম বসু, প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী এবং বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। দই, মিষ্টি খাইয়ে ধান, দুর্বা দিয়ে শিশুদের সবাই আশীর্বাদ করেন। সরকারি নিয়ম নির্দেশিকা মেনে এই বাচ্চাদের দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনেক শিশু এক-দু’মাস বয়স থেকে এই এজেন্সির কর্মীদের দেখাভালে বড় হচ্ছে।
মহকুমা শাসক বলেন, ‘এই পাঁচ শিশুর সরকারিভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহ দেখভাল করার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিয়ম নির্দেশিকা মেনেই এদিন পাঁচ শিশুর অন্নপ্রাশন হয়।’
অন্নপ্রাশনের আয়োজন করে খুশি শিশু সুরক্ষা দপ্তর ও সিডব্লিউসি কর্তৃপক্ষ। সিডব্লিউসি-র চেয়ারম্যান বলেন, ‘অভিভাবকহীন এই শিশুদের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয়েছিল। এখন ওদের সরকারি নিয়ম নির্দেশিকা মেনে লালনপালন করা হচ্ছে। এই পাঁচ শিশুর অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থা করায় আমরা আবেগতাড়িত।’
পুরোহিত তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘যতটা সম্ভব অন্নপ্রাশনের নিয়মগুলি সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। গঙ্গাজল দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাড়ির মতো সব নিয়ম পালন করা সম্ভব না হলেও অনেক কিছু করা হয়েছে। এরকম অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে আমার বেশ আনন্দ হচ্ছে।’