সোনাপুর: বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে বড় সাফল্য পেল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। বন দপ্তরের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া এক চিতাবাঘের চামড়া পাচারকারীর সাজা ঘোষণা হল। অন্যদিকে, ওই অপরাধীকে ধরার জন্য মামলার তদন্তকারী অফিসার চিলাপাতার রেঞ্জ অফিসার সুদীপ্ত ঘোষকেও পুরস্কৃত করেছে আদালত।
সোমবার আলিপুরদুয়ার আদালত সিজেএম লুকাস বসুমাতারি নামে এক ব্যক্তির ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০,০০০ টাকা জরিমানার রায় ঘোষিত হয়। ওই ব্যক্তি অসমের কোকরাঝাড়ের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া অপরাধী জরিমানার জন্য যে টাকা দেবে, সুদীপ্ত সেটার অর্ধেক পাবেন। বন্যপ্রাণ রক্ষায় অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে কৃতিত্ব অর্জনের জন্য আদালত এদিন এমন পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
বনকর্তারা এই গ্রেপ্তারি ও সাজা ঘোষণার ঘটনাকে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছেন। অভিযুক্তের সাজা ঘোষণার পর জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনাধিকারিক পারভিন কাশোয়ান বলেন, ‘লুকাস বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার সাজা ঘোষণা হওয়ায় অন্য অপরাধীদের মধ্যেও ভয় জন্মাবে।’ সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রমাণ জোগাড় করে আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল। বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইন ১৯৭২-এর নতুন সংশোধনের পর এটিই সর্বোচ্চ কারাদণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আদালত সেই রায়ই দিয়েছে।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৩ জুন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতার রেঞ্জ অফিসার সুদীপ্ত ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল। তখনই আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন বঞ্চুকামারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের চামড়া সহ লুকাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। বন দপ্তরের কাছে খবর ছিল যে পাচার করার জন্যই ওই চামড়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এরপর থেকে মামলা চলতে থাকে। ঘটনার আট মাসের মাথায় আদালতে অপরাধীর সাজা ঘোষণা হল।
সুদীপ্ত বলেন, ‘গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই অভিযান করা হয়েছিল। আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে আমরা খুশি। এর ফলে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পাব।’ জানা গিয়েছে, লুকাস আগে থেকেই বন দপ্তরের নজরে ছিল। ২০১৫ সালে গন্ডার শিকার এবং মণিপুর থেকে জলদাপাড়ায় অবৈধ অস্ত্র পাচারে তার জড়িত থাকার সূত্র পেয়েছে বন দপ্তর। এছাড়া আগে সে মাদক পাচার মামলাতেও গ্রেপ্তার হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সেসময় জামিনের পরে লুকাস আবার কুখ্যাত পাচারকারী রিকোচ নার্জিনারির সঙ্গে জোট বেঁধে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।