সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোঘাটে তৃণমূল নেতা খুনে ১৪ বছর পর সাজা ঘোষণা করল আরামবাগ আদালত। এদিন দোষীদের মধ্যে একজনকে ফাঁসি ও ১৮ জনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন বিচারক। গতকাল, সোমবার ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। ২০১১ সালে গোঘাটের তৃণমূল নেতা শেখ নইমুদ্দিনকে মাথায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল গোঘাটের তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক বিশ্বনাথ কারকেরও। যদিও ওই মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত। বলদেব বসু নামে প্রাক্তন সিপিএম কর্মীকে এদিন ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে আরামবাগের গোঘাটের সাওড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর সাওড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূল নেতা শেখ নইমুদ্দিনকে। সেই ঘটনায় প্রবল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল এলাকায়। মৃতের স্ত্রীর তরফে গোঘাট থানায় ৩০ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তৃণমূল কর্মী খুনে গোঘাটের তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, তৎকালীন সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর রায়, দেবু চট্টোপাধ্যায়ের নামও জড়িয়েছিল। এছাড়াও অভিযোগে নাম ছিল একাধিক সিপিএম নেতা-কর্মীর।
পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। আরামবাগ মহকুমা আদালতে এই মামলা ওঠে। অ্যাডিশনাল সেশন জজ কোর্টের বিচারপতি শিশিরকুমার আগরওয়ালের এজলাসে এই মামলার শুনানি চলে। এদিকে পুলিশের তদন্তে একাধিক তথ্য সামনে আসতে থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে চার্জশিট ফাইল করা হয়। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলে এই মামলা। মামলা চলাকালীন চারজন অভিযুক্ত মারা যান। দীর্ঘ শুনানি শেষে গতকাল, সোমবার আদালত ২৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। ১৪ বছর পর ওই মামলায় ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, সিপিএম নেতা ভাস্কর রায়, দেবু চট্টোপাধ্যায়দের নামে ওঠা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়নি। ওই তিনজন-সহ মোট সাতজনকে বেকসুর খালাস করা হয়। আদালতের তরফে জানানো হয় আজ, মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা হবে।
এদিন সেই সাজাই শোনানো হল। অ্যাডিশনাল সেশন জজ কোর্টের বিচারপতি শিশিরকুমার আগরওয়াল বলদেব বসুকে ফাঁসির সাজা শোনালেন। বাকি ১৮ জনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনানো হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ছিল পুলিশের।