সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিটি মানুষের দিন শুরু হয় হাই তুলে! সারাদিনও অসংখ্যবার হাই ওঠে প্রায় সকলেরই। কিন্তু হাই তুলতে দিয়ে জীবন চলে যেতে বসেছিল সদ্য মা’র। এও সম্ভব নাকি? হ্যাঁ! এমনটাই ঘটেছে যুবতীর সঙ্গে।
হেইলি ব্ল্যাক। বয়স ৩৬। তিন সন্তানের মা। বছর খানেক আগে তিনি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। একদিন ভোরে সদ্যজাতের জন্য বোতলে দুধ ভরছিলেন। সেই সময় হাই তুলতে গিয়ে আচমকা টান লাগে ঘাড়ে। প্রাণে বাঁচা বা বেঁচে থাকলেও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সম্ভাবনা প্রায় ছিলই না! পরে জানা যায় ভেঙে গিয়েছিল ঘাড়। আজও সেই অভিশপ্ত সকালের কথা মনে পড়লে আঁতকে ওঠেন হেইলি।
এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি বলেন, “প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিকভাবে হাই তুলে ছিলাম আমি। সেদিন হাই তোলার সঙ্গে সঙ্গে আমি শরীরে বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূতি হয়। যা ধীরে ধীরে গোটা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল আমার শরীরের খিঁচুনি হচ্ছে।” এই ঘটনার পর তিনি তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানান। কিন্তু তিনি প্রথমে পাত্তা দেন। হেইলি জানান, “আমার স্বামী আমাকে বলেন তুমি ঠিক আছো। কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম শরীর আরও খারাপ হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স ডাকতে বলি। হাসপাতালে যাওয়ার পথও ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক। প্রতিটি ঝাঁকুনিতে মনে হচ্ছিল যেন আমার মেরুদণ্ড ছিঁড়ে যাচ্ছে।”
হাসপাতালে যাওয়ার পর যে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা হয়েছিল তা নয়। চিকিৎসকরাও বুঝতে পারছিলেন। ঠিক কী হয়েছিল হেইলির। তিনি বলেন, “কেউ আমার কথা শুনছিল না। আমি সারারাত ব্যথায় চিৎকার করেছিলাম।” পরে রোগ নির্ণয় করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। তবে পুরোপুরি ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল। তবে অস্ত্রোপচার পুরোপুরি সফল হয়। তবে হাইলির মেরুদণ্ডের স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়েছে।
হেইলির কথায়, “অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা বলেছিলেন আমি আগের মতই প্রায় সমস্ত কাজ করতে পারব। তবে আমি বারবার ভাবছিলাম, হাই তুলতে গিয়ে আমার ঘাড় ভেঙে ফেলেছি, এটা কীভাবে সম্ভব?” পুরোপুরি সেরে ওঠার আগেও অনেক কঠিন পরিস্থিতি মুখে পড়তে হয়েছিল সদ্য মা হওয়া হেইলিকে। তার কথায়, “আমি কাজ করতে পারতাম না। বাচ্চাদের যত্ন নিতে পারতাম না। বাড়িঘরও হারাতে হয়েছে। ওই ঘটনার পর আমাদের পুরো পৃথিবী উলটে গিয়েছিল।”
তবে এখন তিনি প্রায় সুস্থ। তবে কিছুটা সমস্যা থেকেই গিয়েছে। তবে সুস্থতার জন্য চিকিৎসক দলকে ধন্যবাদ জানান হেইলি। তাঁর কথায়, “আমি হুইলচেয়ারে বসে নেই এটা একটা অলৌকিক ঘটনা। আমি হাঁটতে পারার জন্য এবং আমার সন্তানদের সঙ্গে থাকতে পারার জন্য আমি প্রতিদিন ওঁদের ধন্যবাদ জানাই।”