সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতবর্ষের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস আজ। আর এই দিনই লালকেল্লা থেকে ‘নতুন ভারত’ গড়ার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রায় ১০৩ মিনিট ধরে চলা ভাষণে ভারতবর্ষের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ রাখেন। একইসঙ্গে দেশবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতনতার পরামর্শ দিতে গিয়ে বলেন, “আগামী বছরগুলিতে আমাদের দেশে ওবেসিটি একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি পরিবারে যদি রান্নার তেলের ব্যবহার ১০% পর্যন্ত কমিয়ে আনা যায়, তাহলে জাতির স্বাস্থ্যের জন্য তা সুফল দেবে।”ওবেসিটি বা স্থূলতার সমস্যা এখন শুধু শহরগুলিতে সীমাবদ্ধ নেই। শহর ছাড়িয়ে তা ভারতবর্ষের গ্রামান্তরেও দেখা দিতে শুরু করেছে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য জরিপ-৫ (২০১৯-২১) অনুসারে ওবেসিটির জন্য ভারতবর্ষে ডায়াবেটিসে ভুগছেন ১০ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ। এই পরিসংখ্যান রীতিমতো আতঙ্কের। ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রায় প্রতি ৩ জন ভারতীয়র মধ্যে ১ জন ওবেসিটিতে ভুগবেন।
ওবেসিটির সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। সারাদিন অফিসে বসে কাজ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস কিংবা দৈহিক পরিশ্রমের অভাবের ফলে দেখা দিচ্ছে অতিস্থূলতা। তাই ছোট থেকেই বাবা মায়েদের নিজের সন্তানের প্রতি সচেতন হওয়া দরকার। আবার জিনগত কারণেও অনেকেরই জন্ম থেকে নিত্যসঙ্গী স্থূলতা।
ওবেসিটি দেখা দিলে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বাড়ে?
(১) স্থূলতা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
(২) স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ।
(৩) ওবেসিটি কোলেস্টেরল বাড়ায়।
(৪) স্থূলতা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক। অতিরিক্ত চর্বি হৃদপিণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
(৫) স্তন ও কোলন ক্যানসার, এন্ডোমেট্রিয়াম, কিডনি এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।
(৬) জয়েন্টের চাপের কারণে অস্টিওআর্থারাইটিস দেখা দেয়।
(৭) লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ দেখ দেয়। এই রোগটি লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী ভাষণে স্থূলতা প্রতিরোধে রান্নায় তেলের ব্যবহার ১০% কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। রান্নায় ভাপানো বা সিদ্ধ জাতীয় খাবারের উপর জোর দিয়েছেন তিনি। তেলের ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি প্রতিদিন যোগব্যায়াম বা মর্নিং ওয়াকেরও পরামর্শ দেন তিনি। দৈনন্দিন জীবনে সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার মতো অ্যারোবিক ব্যায়ামের কথা বলেন। নিয়মিত এই ব্যায়ামে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। ফুসফুস এবং রক্ত সংবহনতন্ত্রের জন্যেও খুব উপকারী এই ব্যায়াম। ওবেসিটি মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ কমানো এবং জাঙ্ক ফুড ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করা একান্ত প্রয়োজন। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন