সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতার বুকে এই মুহূর্তে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি চললেও পাহাড়ে কিন্তু পুরোদমে বর্ষা শুরু হয়েছে। তবে পায়ের তলায় যাঁদের সরষে আর পাহাড় যাঁদের টানে তাঁরা কী করে সেই টান অবহেলা করবে? তা তো সম্ভব নয়। তাই সাইটসিনের সমস্ত প্ল্যান একপাশে সরিয়ে রেখে এই বর্ষার মরশুমের জন্য আপনার ডেস্টিনেশন হোক উত্তরবঙ্গের অফবিট লোকেশন। আজ আপনাদের তেমনই এক অফবিট লোকেশনের সন্ধান দেব। যা থাকবে একেবারে আপনাদের স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যেই।
উত্তবঙ্গের এই মুহূর্তে পছন্দের অফবিট লোকেশন হয়ে উঠছে তেন্দ্রাবং। কালিম্পংয়ের এই ছোট্ট গ্রামে কয়েকদিনের ছুটিতে ঘুরে আসতেই পারেন। যদি অফিসে উইকএন্ডটা ম্যানেজ করে নিতে পারেন তাহলে তো আর কোনও কথাই নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ২-৩ দিনের গন্তব্য হতেই পারে এই অফবিট গ্রাম।

যেহেতু পাহাড়ে এই মুহূর্তে বর্ষার মরশুম সেক্ষেত্রে সাইটসিনে যাওয়া ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। পাহাড়ি রাস্তায় এই মরশুমের ফলে কোথায় যে বিপদ ওঁত পেতে বসে থাকবে তার কোনও ঠিক নেই। সেক্ষেত্রে সাইটসিনের প্ল্যান এড়িয়ে শুধুমাত্র প্রকৃতিকে উপভোগ করতে আপনার জন্য তেন্দ্রাবং হল এক্কেবারে পারফেকট।
কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে নর্থ বেঙ্গলে যাব, সর্বোপরি পাহাড়ে যাব, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখব না? আলবাত দেখবেন। তবে হ্যাঁ, এই বর্ষায় স্লিপিং বুদ্ধার ঘুম যদি সত্যিই ভাঙে আর আপনাকে তিনি দেখা দেন তবে বুঝতে হবে তা আপনার বরাতজোর। বর্ষায় পাহাড়ে মেঘ করে থাকার ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুযোগ খুব একটা হয় না। তবে বর্ষার মরশুম ছাড়া অন্য মরশুমে গেলে আপনি তেন্দ্রাবংয়ের হোমস্টে থেকেই দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কীভাবে যাবেন তেন্দ্রাবং?
ট্রেনে এনজিপি স্টেশনে পৌঁছে আপনার গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য আপনি চাইলে শেয়ার গাড়িতে করে চলে আসতে পারবেন। সেক্ষেত্রে খরচ অনেকটাই কমে যায়। তবে অনেকে মিলে বেড়াতে গেলে এবং ট্রেন থেকে নেমে ঝক্কি এড়িয়ে গাড়ি ধরে নিতে চাইলে আপনি হোমস্টেতেও গাড়ির জন্য বলে রাখতে পারেন। স্টেশন থেকে এই গ্রামে পৌঁছাতে আপনার লাগবে ৪০মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা। সেক্ষেত্রে গাড়ির খরচ পড়ে মোটামুটি ৪০০০-৪৫০০ টাকার মধ্যে।
খরচ কত পড়বে?
একটু একটু করে জনপ্রিয়তার খাতায় নাম লেখাচ্ছে পাহাড়ি এই জনপদ তেন্দ্রাবং। পাহাড়ে যে ভাবে হোমস্টের খরচ দিনে দিনে বেড়ে চলেছে সেক্ষেত্রে সাধারণ মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে তা আর থাকছে না। তবে সেসবের মাঝেও স্বস্তি একটাই যে এই অফবিট গ্রামে হোমস্টের খরচ আপনার পকেটে চাপ সৃষ্টি করবে না। খরচ থাকবে ১২০০ টাকা থেকে খুব বেশি হলে ১৫০০ টাকার মধ্যে।

সুযোগ পেলে কী কী দেখবেন?
এই গ্রামকে সবুজের চাদরে ঢেকে রেখেছে প্রকৃতি। সঙ্গে চলে মেঘ বৃষ্টির খেলা। এসব উপভোগ করতে করতে আপনি চাইলে দেখে নিতে পারেন ডুকা জলপ্রপাত ও বেশ কিছু ঝোরা। পায়ে হাঁটা দূরত্বেই পাবেন। আর এই সবকিছু মিলিয়ে বর্ষায় তেন্দ্রাবং যেন আরও বেশি সুন্দর হয়ে ওঠে। বর্ষার মরশুম ছাড়া অন্য কোনও মরশুমে যদি আপনি এখানে যান তাহলে একই সঙ্গে আপনি সেরে ফেলতে পারবেন- রিশপ, লাভা, লোলেগাঁও, কোলাখাম, নেওরাভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, ছাঙ্গে ফলস, রামাধুরা, সিলেরি গাঁও, ইচ্ছেগাঁও ও সিল্ক্রুটের সফর।
বুক ভরে অক্সিজেন নেওয়ার পাশাপাশি কিন্তু পাহাড়ি খাবার মিস করলে হবে না। এই গ্রামে স্থানীয়রা নিজেদের খামারেই প্রচুর শাক সবজি ফলান। আর সেসবই কিন্তু তাঁরা রান্না করেন পর্যটকদের জন্য। পাহাড়ি খাবার, মোমো সবকিছু মিলিয়ে আপনার এই বর্ষায় পাহাড় ভ্রমণের আন্যতম অফবিট গন্তব্য হয়ে উঠুক তেন্দ্রাবং।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন