সতর্কবার্তা

সতর্কবার্তা

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


  • বিপুল দাস

এক

রাতে ঝড়ের দাপটে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেনি কালা ঘোষ। কাল বিকেলে আকাশের মেঘের দিকে তাকিয়ে তার বুক কেঁপে উঠেছিল। আকাশজুড়ে যেন মারদাঙ্গা হয়েছে। মেঘের দল রক্ত নিয়ে হোলি খেলেছে। ওদের গর্ভে জল নয়, রক্ত ছিল। ওই মেঘ বর্ষণসম্ভব হলে পৃথিবীর মাটিতে জল নয়, রক্তের ধারাসার নামত। মেঘে মেঘে নিজেদের ভেতরেই ওরা উন্মত্তের মতো হানাহানি করে রক্ত ঝরিয়েছে। আকাশ তো নয়, যেন রণক্ষেত্র। দুই যুযুধান মেঘপার্টি জলের কথা ভুলে যুদ্ধে মেতে উঠেছিল। নীচে কতদিনের জলহীন রুক্ষ পৃথিবীর কথা ভুলে গিয়েছিল ওরা। কালা ঘোষের মনে হয়েছিল রক্তগঙ্গা বইছে আকাশে। অলকানন্দার জলের রং পালটে গেছে। এ কোনও শুভ লক্ষণ নয়। অমঙ্গল আশঙ্কায় বুকের ভেতরে বিপজ্জনক কেরোসিন গড়ায়। ভেতরে ভেতরে কালা ঘোষ দেশলাই, লাইটার এবং যাবতীয় আগুনের কথা জোর করে ভুলে যেতে চাইছিল। বৌবাচ্চা নিয়ে ঘরকরা সামান্য মানুষ সে, আগুনে তার বড় ভয়, উচ্ছন্নে যাওয়ার ভয়, পোড়া ঘায়ের যন্ত্রণার ভয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল ওই আগুন তার সামান্য জমির সামান্য ফসলের ওপর না নেমে আসে। ঝড়, বন্যা, আগুন তো আগে গরিবের দিকেই ধেয়ে আসে। ভগবানের যে কেন এমন বিচার, কে জানে।

চৈত্রের শেষ। বড় সড়ক থেকে একটা মেঠোপথ নেমে গেছে শিমুলতলির দিকে। ধুলোওড়া সে পথের দু’পাশে শুধু শিমুল নয়, অজস্র পলাশও ফুটে থাকে এ সময়। দূর থেকে দেখেই বোঝা যায় ওই পথের ওপর দিয়ে রয়েছে লাল শামিয়ানা। মাটিতে পড়ে থাকে অজস্র ফুল। হাট থেকে শিমুলতলিতে ফিরছিল কালা ঘোষ। তার কাঁধে বসে রয়েছে তিন বছরের ছেলে। ছেলের জন্যই কবিরাজি তেল আনতে গিয়েছিল। একেবারে কানু কবিরাজকেও দেখিয়ে এনেছে। ছেলেটার একটা হাত জন্ম থেকেই একটু বাঁকা। কানু কবিরাজের কাছে এসব নাকি জলভাত। সবাই বলত। কানু কবিরাজকে দেখিয়ে এনেছিল কালা। কবিরাজ গ্যারান্টি দিয়েছিল। ভিজিট আর তেলের দাম দিয়ে ভালোই খসেছিল কালা ঘোষের। তা যাক, ছেলেটা সুস্থ হলে তার যে আনন্দ হবে, শান্তি আসবে, তার তুলনায় এ সামান্য টাকা। ভবিষ্যতে ওই ডানহাত দিয়েই তো করেকম্মে খেতে হবে। চিকিৎসা করলে গোড়া থেকেই করা উচিত। দেরি হলে রোগ গেড়ে বসবে। তখন আর সারানোর পথ থাকবে না।

কালা ঘোষের ছেলের নাম সুদাম। প্রথম যে বার তাকে কাঁধে নিয়ে হাটে গিয়েছিল তার বাবা, হাট দেখে ভারী আমোদ পেয়েছিল সে। পৃথিবীতে এত লোকও আছে, আর তাদের সবার ডানহাত সোজা, কী আশ্চর্য! এত রঙের জামাকাপড় হয়। এত দোকান। মিষ্টির দোকানে তাকে চামচ দিয়ে কেটে রসগোল্লা খাইয়ে দিয়েছিল তার বাবা। তার পর থেকেই বাবার সঙ্গে হাটে যাওয়ার জন্য সে দস্তুরমতো প্রস্তুত হয়ে থাকত। মা বারণ করলে চিলচিৎকার জুড়ে দিত। এবার কালা ঘোষ তাকে স্বেচ্ছায় সঙ্গে নিয়েছিল। ইচ্ছে ছিল নতুন বছরের জন্য বৌয়ের একটা শাড়ি আর সুদামের জন্য একটা সুন্দর জামা কিনে দেবে।

পথের মাঝে, দোকানের পাশে রঙিন কাপড় ঝুলছে, সেখানে কী সব লেখা। সুদাম অবাক হয়ে সেগুলো দেখছিল। তার বর্ণপরিচয় হলেও এখনও শব্দপরিচয় হয়নি। শব্দের পেছনে অর্থ থাকে– এখনও সে বোধ তার হয়নি। ফলে সে চৈত্র সেল এবং রিবেট ব্যাপারটা বুঝতে পারছিল না। কিন্তু কে জানে কেন এসব দেখে তার নতুন এক ধরনের উত্তেজনা হচ্ছিল।

“ওগুলো কী বাবা?”

                ফেস্টুনের দিকে ভালো হাতটা তুলে জিজ্ঞেস করল সুদাম। একটা দোকানের বাইরে বেঞ্চিতে বসেছে ওরা। একটু বিশ্রামের দরকার ছিল কালার। সে একটা চা আর সুদামের জন্য নিমকির অর্ডার দিয়েছে। চা খেয়ে ধীরেসুস্থে একটা বিড়ি ধরাবে। ছেলের কথা শুনে ফেস্টুনগুলোর দিকে তাকাল। জামাকাপড়ের দোকানগুলোর সামনে চৈত্র সেলের বিজ্ঞাপন। ছাড় দেবার কথা। লাল, নীল ফুলের মতো অক্ষরগুলো ফুটে আছে। বাস ছাড়ছে। পাবলিক দু’দণ্ড দাঁড়িয়ে পড়ছে। ঠিক যেন কাচপোকার পেছনে অবশ আরশোলা, ফুলের মধুর জন্য পাগল মৌমাছি। কালা ঘোষ এও জানতে পারল যে, শুধুমাত্র গোডাউন পরিষ্কার করার জন্য ক্ষতি স্বীকার করেও অনেকে অবিশ্বাস্য ছাড়ে মাল দিচ্ছে। সবচেয়ে বেশি যে দোকানে ছাড় দিচ্ছে, কালা সেখানেই যাবে। সুদামের জামা আর বৌয়ের শাড়ি কিনতে হবে। কাল পয়লা বৈশাখ। আজ চৈত্র সংক্রান্তি। সস্তায় কেনাকাটার শেষ সুযোগ। সুদামের মুখ থেকে নিমকির ভাঙা টুকরো মুছে দিল কালা। একটা কালো সুতোর বিড়ি টিপেটুপে উলটো দিকে ফুঁ দিয়ে সাফা করে নিল। জুত করে বিড়িটা খেয়ে বসাক স্টোর্সেই যাবে। অর্ধেক দামে মাল দিচ্ছে ওরা।

“আর একটু বড় হও। যখন পড়তে শিখবে, নিজেই বুঝতে পারবে।”

                কেনাকাটা সেরে কালা ঘোষ ছেলেকে আবার কাঁধে তুলে নিল। শিমুলতলি নেহাত কাছে নয়। সে একা হলে হনহনিয়ে পার হতে বেশি সময় লাগত না তার। কিন্তু সুদামকে নিয়ে অত জোরে হাঁটা যাবে না। হাট পেরিয়ে মাঠের পথ ধরলেই উঁচুনীচু পথে পা এদিক-ওদিক হয়ে যায়। সাবধানে পা না ফেললেই শরীর টলে যায়। সে পড়ে পড়ুক, কিন্তু তার কাঁধ থেকে সুদাম যদি পড়ে… সেকথা ভাবতেই তার বুকের ভেতরে ভয়ে শিরশির করে উঠল। একেই তার ডানহাত খুঁতো, তার ওপর যদি আবার অন্য কোথাও চোট পায়। শিব শিব… বিড়বিড় করে ইষ্টদেবতার নাম স্মরণ করল কালা ঘোষ। বাসু চক্রবর্তী বলেছে ‘শিব’ মানেই মঙ্গল। অশুভ কথা, অমঙ্গলের কথা মনে উদয় হলেই ওই নাম নিতে হয়। সব বিপদ কেটে যায়। বুকে বলভরসা আসে।

                বাজারের পথের শেষের দিকে পথের ওপর ছিটকাপড়ের দোকান। সেসব পেরিয়ে চিঁড়ে, মুড়ি, খই, গুড়, বাতাসার দোকান। মনে পড়ল বৌ বলেছিল বাতাসা আর নকুলদানা নিতে। ছেলেকে নামিয়ে বাতাসা আর নকুলদানা নিল কালা। ঘরে ঠাকুরের আসন পেতেছে তার বৌ। রোজ জলবাতাসা দেয়। কালা ঘোষের ওদিকে আগ্রহ নেই। তার জন্য একটা শিবঠাকুরের ক্যালেন্ডার কাচবাঁধাই করে নিয়েছে সে। বেশ বড়। কোথাও বেরোবার আগে ‘জয় শম্ভু’ বলে প্রণাম করে বেরোয়। একটা বাতাসা সুদামের হাতে দিল কালা। ওটা নিয়ে কিছুক্ষণ শান্ত থাকবে ছেলে, নইলে অনবরত তার জিজ্ঞাসা। এটা কী, ওটা কী। অফুরন্ত তার কৌতূহল। উত্তর দিতে দিতে জেরবার হয়ে যায় কালা ঘোষ। দু’একসময় ধমকও দেয়। চৈত্র সেল লেখা ফেস্টুনগুলো গরম বাতাসে দোল খায়। পাবলিক রিবেটের হিসেবের দিকে লোভী চোখে তাকায়। দোনামনা করে, শেষে একটা দোকানে ঢুকে পড়ে।

দুই

রঘুর সারের দোকান পার হওয়ার পর বাজার শেষ। তারপর পথের পাশে ছোটবড় গাছপালা, ঝোপজঙ্গল। তার ফাঁকে ফাঁকে দু’চারটে দোকান। সারাদিন শুনসান থাকে, সন্ধের পর দু’চারজন করে এদিক-সেদিক তাকিয়ে দোকানের চালাঘরে ঢুকে পড়ে। এসব দোকানে বেশি পাওয়ারের বিজলি বাতি জ্বলে না। টিমটিম করে হলদে আলো জ্বলে। দোকানের ঝাঁপ আধেক খোলা, আধেক বন্ধ। তাতেই যেন ওইসব দোকানের দিকে পাবলিকের টান বেশি আসে। পুরো খোলা থাকলে রহস্য থাকে না। আর, এই দোকানগুলোর পেছন দিয়ে একটা সরু পায়েচলা পথের ইশারা রয়েছে। সেটা ধরে একটু এগোলেই কয়েকটা খাপরার ঘর রয়েছে। কালা জানে ওদিকটায় খারাপ মেয়েরা থাকে।

এসব পেরিয়ে সে শিমুলতলির দিকে যাওয়ার মেঠোপথে পা দিল। বছরের শেষ দিন, বেলা দুটো-আড়াইটে নাগাদ একটা ধুলোর ঝড় ওঠে এ সময়ে। গরম বাতাসের ঘূর্ণিতে ওড়ে প্লাস্টিক, ছেঁড়াকাগজের টুকরো, শুকনো পাতা। নদীর পাড় থেকে বালি উড়ে আসে। কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর কালা ঘোষের মনে হল সুদামের মাথায় বোধহয় চড়া রোদ লাগছে। একটা গাছের নীচে দাঁড়াল কালা। তার নিজের জামা খুলে ছেলের মাথায় পেঁচিয়ে দিল। অবাক হয়ে দেখল তার গেরুয়া রঙের জামার পাগড়ি দিয়ে সুদামকে যেন ছোটবেলার বিবেকানন্দ মনে হচ্ছে।

একটু পা চালাতেই দেখল আর চড়া রোদ নেই, বেশ ছায়া পড়েছে মাঠঘাট, গাছপালাজুড়ে। অবাক হয়ে আকাশের দিকে তাকাল কালা। কী আশ্চর্য, এই ছিল গনগনে চাঁদি-ফাটানো আগুনের তাপ। যেন আকাশের গোলা থেকে আগুনের ধারা নেমে আসছে। আবার, এই হয়ে গেল ঠান্ডা–ঠান্ডা ছায়া। কিন্তু এ কেমন মেঘ সারা আকাশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আর, বিকেলের এমন রঙিন আলো দেখে তার বুক কেঁপে উঠল কেন। শুধু পশ্চিম নয়, সারা আকাশজুড়েই লাল মেঘ ছড়িয়ে পড়েছে। টকটকে লাল। টাটকা রক্তের মতো ঘন লাল। আলতাফের আলের ওপর যেমন পড়েছিল যুধিষ্ঠির মণ্ডল। গলার নলি দো-ফাঁক। ঘন লাল রক্তে মাখামাখি হয়ে ছিল জমির কাদা। আকাশও যেন রক্তপিণ্ডের মেঘ নিয়ে ছড়িয়ে আছে। পুব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণের জমির দখল নিয়ে খুনোখুনি হয়েছে মেঘে মেঘে। জল নয়, মেঘের পেটে পেটে থকথকে রক্ত রয়েছে। জয় শিবো শম্ভু। রক্ষে করো বাবা। তোমার এই চেহারা দেখলে বড় ভয় করে। শান্ত হও বাবা ভদ্দেশ্বরো শিবো মহাদেব।

জোরে পা চালাল কালা। মাথার ওপর এরকম রক্তবর্ণ মেঘ নিয়ে হাঁটতেও ভয় করে। সূর্যের এতক্ষণে আরও পশ্চিমে নেমে যাওয়ার কথা। চারপাশে তাকিয়ে কালা ঘোষ দেখল খুনখারাবি রঙের আবিরগোলা জল কেউ ছড়িয়ে দিয়েছে দু’পাশের খেতে, দূরের গাছপালায়, ঘরবাড়ির ওপরে। মনে হয় যেন উচ্ছন্নে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। সর্বনাশের লক্ষণ এসব। হবেই তো। দুনিয়াজুড়ে যেভাবে মানুষ মানুষের পিঠে ছুরি মারছে, গলায় কোপ বসাচ্ছে, মাথা ফাটিয়ে দিচ্ছে, বাচ্চা বাচ্চা মেয়ের রক্তমাংস পশুর মতো খাচ্ছে- বাবা মহেশ্বর আর কতকাল পুকুরের শীতল জলে পাটের ঠাকুর হয়ে রইবেন। আর, তিনি যদি রেগে যান, তবে যে কী ভয়ানক দক্ষযজ্ঞ কাণ্ড হবে,  সে তো দুনিয়ার সবাই জানে।

“সুদাম, ভয় করছে না তো?”

“না তো। কী সুন্দর আলো।”

“তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছাতে হবে, ঝড় আসতে পারে। দেখছিস না গাছের ডাল, নারকেল, সুপারি গাছগুলো কেমন জোরে জোরে দুলছে।”

“বাবা, বাড়ি গিয়ে একবার নতুন জামাটা পরব?”

“হ্যাঁ, পরিস। এখন চুপ কর।”

কালা ঘোষ মুখ তুলে একবার সমস্ত আকাশটা দেখল। অন্যান্য দিক কালচে হয়ে এসেছে, শুধু পশ্চিমের আকাশ এখনও কালচে-লাল। পশ্চিমের রণাঙ্গন এখনও শান্ত হয়নি। আজ রাতে ভয়ংকর দুর্যোগ শুরু হবে। চাষাভুসো মানুষ কালা ঘোষ তার অভিজ্ঞতা দিয়েই বুঝল। কালভৈরব আজ খেপে উঠবে। কে জানে কোথায় কোন অনাচার হয়েছে। কাঁধের ওপর বসা সুদামকে ভালো করে আঁকড়ে ধরল কালা। বেগুনি রঙের গাছের শিকড়বাকড় নেমে এল আকাশ চিরে। কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়ল বিকট শব্দে। বাতাসে বারুদ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল।

“ভয় নেই সুদাম। আমাদের কিছু হবে না। এই তো বাড়ি এসে গেছি। আর পাঁচ মিনিট। শক্ত করে ধরে থাক আমাকে।”

তিন

বৃষ্টির দাপট বাড়তে শুরু করলে চিন্তায় পড়ে গেল কালা। তার ঘরের ছাউনির অবস্থা ভালো নয়। ভেবেছিল এবার বর্ষার আগে নতুন করে ছাইবে। পাকাছাদ তো দূরের কথা, নতুন টিন বসানোর অবস্থাও তার এখন নেই। সামান্য কিছু ধানিজমি আর শাকসবজি ফলিয়ে হাটে নিয়ে যায়। কোনওমতে চলে যায়। আর একটা শখ আছে তার। মাছ ধরার শখ। শুখার মরশুমে সে তার ঘরের সামনে সজনে গাছের নীচে বসে জাল বোনে। গাবের আঠা দিয়ে সুতো মেজে পোক্ত করে। জালকাঠি লাগায়। তারপর নদী, খাল, বিল চষে জাল মারে। ছোট মাছই বেশি। বড় মাছ দৈবাৎ ধরা পড়ে। ছোট মাছে খালুই কোনও দিন উপচে উঠলে হাটে নিয়ে যায়। বড় মাছ পেলেও। বর্ষা আসার আগেই কালা তার হাতজালের ছেঁড়াফাটা সারিয়ে নেয়।

রাতে শোয়ার আগে তার বৌ অভিজ্ঞতাবশত সম্ভাব্য জায়গাগুলোতে বালতি, মগ, হাঁড়ি, কলসি পেতে রেখেছিল। আজ নিশ্চয় ঢালবে। আকাশের যা অবস্থা, ছাউনির ভেতর দিয়ে জল আসবেই। তখন তাড়াহুড়ো করতে হবে। ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে, নিশ্চয় কাছাকাছি কোথাও বৃষ্টি নেমেছে। এদিকে এখনই ছুটে আসবে।

ভাবতে ভাবতেই শোঁ শোঁ একটা দমকা বাতাস এল। সঙ্গে হাজার ঘোড়ার পায়ের শব্দে বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি। বৃষ্টির দাপট ক্রমে বাড়ছে দেখে চিন্তায় পড়ে গেল কালা। এর মাঝেই বিছানায় জল পড়তে শুরু করেছে। ওপরে তাকিয়ে দেখল ঠিক সুদামের মাথার ওপর ছাউনি সরে গেছে, হয়তো বাতাসে উড়েই গেছে। এখনই ভিজে যাবে তার ছেলে।

“পাগলের মতো কী করো তুমি? ঠাকুরদেবতা নিয়া তামসা…।”

                বৌয়ের কথা তার কানেই গেল না। কালা ঘোষ দু’ফুট বাই দেড় ফুটের কাচবাঁধানো মহেশ্বর বগলে নিয়ে খাটে দাঁড়িয়ে ছাউনির বাতার নীচে গুঁজে দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। দুর্যোগ থামলে না হয় একবার প্রণাম করে নেবে।

The submit সতর্কবার্তা appeared first on Uttarbanga Sambad.



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *