রাজ্যপাল ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সক্রিয়তা, সমর্থন চেয়ে মমতা-সহ ৮ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ক্ষুব্ধ স্ট্যালিনের

রাজ্যপাল ইস্যুতে রাষ্ট্রপতির সক্রিয়তা, সমর্থন চেয়ে মমতা-সহ ৮ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি ক্ষুব্ধ স্ট্যালিনের

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে সুপ্রিম নির্দেশের পালটা ১৪টি প্রশ্ন ছুড়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই ঘটনায় দেশের সাংবিধানিক ক্ষেত্রে উঁকি দিয়েছে বেনজির সংঘাতের সিঁদুরে মেঘ। পরিস্থিতি অনুধাবন করে এবার সতর্ক হয়ে উঠলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত বর্তমানে মোড় ঘুরে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টকে। এই অবস্থায় অবিজেপি রাজ্যগুলির সমর্থন আদায়ে দেশের ৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন স্ট্যালিন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি কর্নাটক, তেলঙ্গানা, কেরল, ঝাড়খণ্ড-সহ ৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে স্ট্যালিনের অভিযোগ, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ব্যবস্থায় আঘাত করার চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হয়ে লড়াইয়ের বার্তা দেন স্ট্যালিন। তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম কোর্টকে ১৪টি প্রশ্ন করেছেন। এর নেপথ্যে কোনও রাজ্য বা রায়ের উল্লেখ না করলেও এটা স্পষ্ট যে তামিলনাড়ুর সরকার বনাম রাজ্যপাল মামলায় সুপ্রিম পর্যবেক্ষন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এরপরই স্ট্যালিন লেখেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুপ্রিম রায় শুধু তামিলনাড়ুর জন্য নয় সব রাজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে সমস্যায় ফেলতে রাজ্যপালকে ব্যবহার করছে। অন্যায়ভাবে তাঁরা বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রাখছে। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষা করতে সুপ্রিম কোর্ট সঠিক রায় দিয়েছে। এবার রাষ্ট্রপতিকে ব্যবহার করে সেই রায়ে হস্তক্ষেপের কৌশল নিয়েছে বিজেপি।

এই পরিস্থিতিতে অবিজেপি রাজ্যগুলির কাছে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, ‘আমি এর আগেও সমস্ত অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকার এবং আঞ্চলিক দলগুলির নেতাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই আইনি লড়াই লড়ার জন্য। এখন আমি ব্যক্তিগতভাবে সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করার। পাশাপাশি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো রক্ষা করার জন্য একজোট হয়ে লড়াইয়ে নামার অনুরোধ করছি।’

উল্লেখ্য, এই বিতর্কের সূত্রপাত গত মাসে। সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, আইনসভায় পাশ করা কোনও বিল রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না। ওই বিল নিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাঁদের। সমস্যা হল, এমনিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে এভাবে ‘নির্দেশ’ দিতে পারে না। কিন্তু সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শীর্ষ আদালত ‘সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে বিশেষ রায় দিতেই পারে। এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক শিবিরের বহু নেতা বিচারবিভাগকে তোপ দাগেন।

সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশের পর সম্প্রতি এই ইস্যুতে প্রশ্ন তোলেন খোদ রাষ্ট্রপতি। সংবিধানের ১৪৩ ধারা অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা পান রাষ্ট্রপতিও। সুপ্রিম কোর্টের যে কোনও রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার রয়েছে তাঁর। সেই অধিকার বলে দ্রৌপদী মুর্মু সুপ্রিম কোর্টকে ১৪টি প্রশ্নের মুখে দাঁড় করান। এই ১৪ প্রশ্নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রশ্নগুলি হল, সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালকে বিল পাশের সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে? সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ ক্ষমতাকে কি রাজ্যগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে? কোনও রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে কি আদৌ বিচারবিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে? রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কি সুপ্রিম রায়ে খর্ব হচ্ছে না? রাষ্ট্রপতির পদক্ষেপের পর এবার এই ইস্যুতে বিরোধী শিবিরকে একজোট হওয়ার আবেদন জানালেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *