সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ডনকো পাকড়না মুশকিল নহি, না মুমকিন হ্যায়’ – ডাকাবুকো অপরাধীরা অনেক সময়েই আত্মবিশ্বাস জাহির করতে বলিউডের সুপারহিট সিনেমার এই উক্তিটি করে থাকে। এবার আমেরিকাতেও প্রায় তেমনই উচ্চারণ শোনা গেল। জেল ভেঙে পালানোর পথে ছাপ রেখে বন্দিরা পুলিশকে বার্তা দিয়ে গেল, ‘পারলে আমাদের ধরো।’ সেখানে আঁকা অজস্র গ্রাফিতি। যার পরতে পরতে পুলিশকে কটাক্ষ। নিউ অরলিন্সের কারাগারে এমন ঘটনায় কার্যত টলে গিয়েছে জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তদন্তে নেমেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার নিউ অরলিন্সের জেলে, যাকে বলে মার্কামারা সমস্ত কয়েদিরা বন্দি ছিল। তাদেরই ১০ জন দুঃসাহসিক কাজটি করে ফেলেছে। শনিবার সকালে বন্দিদের হিসেব মেলাতে গিয়েই বিষয়টা ধরা পড়ে। দেখা যায়, ১০ জন কম। খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, বন্দিরা পালিয়েছে। শুধু তাইই নয়, পালানোর পথে নিজেদের কীর্তির ছাপ রেখে গিয়েছে। কারাগারের শৌচালয় ও তার পাইপলাইন সংলগ্ন পথ দিয়েই পালিয়েছে তারা। সেই রাস্তার কোথাও লেখা – ‘খুবই সহজ!’ কোথাও আবার সাফ চ্যালেঞ্জ – ‘পারলে আমাদের ধরো।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রাতে তারা কমলা রঙের পোশাক পরা একদল ব্যক্তিকে জেলের মধ্যে দৌড়তে দেখেছেন, তবে তারা পালিয়ে যাচ্ছে বলে বুঝতে পারেননি।
এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে জেলের নিরাপত্তা নিয়ে। প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির কথা মেনে নিয়েছেন সেখানকার শেরিফ হাটসন। দেখা যাচ্ছে, অনেক গরাদের তালা ভাঙা, কোথাও আবার দরজায় রয়েছে ত্রুটি। কারাগারে কর্মী সংখ্যাতেও সংকট। ১০০ শতাংশ কর্মী নেই, কাজ করছেন ৬০ শতাংশ। আরও উল্লেখযোগ্য, জেলের মধ্যেকার সিসিটিভিগুলির এক তৃতীয়াংশই কাজ করে না। এ যেন যে কোনও তৃতীয় বিশ্বের দেশের কারাগারের দায়সারা নিরাপত্তা চিত্র। আমেরিকার জেলেও এমন দৈন্যদশা! ১০ জন বন্দির এই পলায়নই দিনের আলোর মতো স্পষ্ট করে দিল সেই হতশ্রী ছবিটা। নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগে অবশ্য তিনজন রক্ষীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে বন্দিদের পালানোর ঘটনা ট্রাম্প প্রশাসনের বিশাল পরিকাঠামোয় বড়সড় ধাক্কা নিঃসন্দেহে।