সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আলোচনা ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের সগর্ব ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হল থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। রবিবার সকালে দুই দেশের সেনা একে অপরের বিরুদ্ধে বেলাগাম গোলা-গুলি ছোড়ার অভিযোগ করেছে। এই ঘটনা ট্রাম্পের সংঘর্ষবিরতির কৃতিত্ব নেওয়ার দাবির পালটা চপেটাঘাত বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রুথ সোশাল পোস্টে শনিবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাইয়ের কথা হয়েছে। দুই পক্ষই দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পক্ষে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই দাবি করেন তিনি। ট্রুথ সোশাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, ‘কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো কথা হল আমার। আমি ওঁকে থাইল্যান্ড ও সেখানকার কার্যকরী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া কথোপকথনের বিষয়টি জানিয়েছি। দুই পক্ষই দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পথ খুঁজছি। তারা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের টেবিলে ফেরার কথাও ভাবছে, যা আমরা মনে করছি যুদ্ধ থামা না পর্যন্ত অসম্ভব। ওরা দ্রুত সাক্ষাৎ ও তাড়াতাড়ি যুদ্ধবিরতি এবং শেষপর্যন্ত শান্তির দিকে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের সঙ্গে কথা বলতে পেরে আমি সম্মানিত। দুই দেশেরই এক দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি রয়েছে। সব ঠিক হয়ে গেলে এবং শান্তি ফিরলে আমরা আবার ওদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করব।’
শনিবার ট্রাম্পের এই বার্তার পর রবিবার সকালে ফের যুদ্ধে জড়ায় দুই দেশ। কম্বোডিয়ার তরফে অভিযোগ করা হয়, থাই সেনা রবিবার সকালে তাদের এলাকা লক্ষ্য করে বেলাগাম তোপ ছোড়ে। এই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দাবি, থাই হামলায় দেশের একাধিক মন্দিরকে নিশানা করা হয়। অন্যদিকে, থাইল্যান্ডের তরফে জানানো হয়, কম্বোডিয়ার তরফে প্রথম হামলা করা হয়েছিল। তাদের জনবসতি এলাকা লক্ষ্য করে এই হামলা চলেছে। এমনকী কম্বোডিয়া তাদের বিরুদ্ধে দূরপাল্লার মিসাইলে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলেও দাবি করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানিয়েছি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে আমরা রাজি। তারপরও এই হামলা চালানো হল।’ অন্যদিকে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তৃতীয় দেশ চাই না, তবে দেশবাসীর উপর কোনওরকম হামলা বরদাস্ত হরা হবে না।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষের জেরে কার্যত রক্তস্রোত বইছে ম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে। তিনদিন গোলাবর্ষণের পর অবশেষে শনিবার থাইল্যান্ডের কাছে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানাল কম্বোডিয়া। যদিও সে প্রস্তাব কানে তোলেনি থাইল্যান্ড। এই সংঘর্ষের কারণ ‘এমারেলড ত্রিকোণে’ অবস্থিত একটি শিবমন্দির। দুই দেশই ওই মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে নিজেদের বলে দাবি করে। ওই মন্দিরগুলিকে নিয়ে সংবেদনশীল তিন দেশের সাধারণ মানুষেরা। এলাকাটির দখল নিয়ে বছর পনেরো আগেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে। নতুন করে গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সীমান্ত অঞ্চলে গোলাগুলি চলে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাদের মধ্যে। এরপরেই এফ ১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে কম্বোডিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালায় থাই সেনা।