সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যশস্বী জয়সওয়াল, আকাশ দীপদের হাতে বশীভূত ইংল্যান্ড। পোপদের যদি ‘বাজবল’ থাকে, তাহলে ভারতেরও আছে ‘যশবল’। সোজা কথায় যশস্বী জয়সওয়ালের ব্যাটে বেধড়ক মার। সেঞ্চুরি করে ইংরেজ শাসন করেছেন ভারতীয় ওপেনার। ‘নৈশপ্রহরী’ হিসেবে নামা আকাশ দীপ আবার হাফসেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়লেন। তাতেও রক্ষা নেই। শেষপাতে রবীন্দ্র জাদেজা হাফসেঞ্চুরি করেন। তারপর ইংল্যান্ডের জন্য ‘সুন্দর প্রহার’ তুলে রাখলেন। ভারতের ইনিংস থামল ৩৯৬ রানে। অর্থাৎ, ওভালে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ৩৭৪ রান।
ওভালের পিচে বোলাররা সাহায্য পাচ্ছেন। বল অল্পসল্প সুইং করছে। টিপিক্যাল ইংলিশ কন্ডিশনেই শুরু হয়েছে তৃতীয় দিন। আকাশ ভর্তি মেঘ, ফুরফুরে হাওয়া – সবই ছিল। পেসারদের বধ্যভূমি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এমন পরিবেশ যথার্থ। কিন্তু এটাও ঠিক, বল ব্যাটে আসছে। একটু ধৈর্য ও সাহস নিয়ে খেললে সাফল্য পাওয়া কঠিন কিছু নয়। যেটা করে দেখালেন যশস্বী ও আকাশ দীপ। বিশেষ করে বলতে হয় ‘নৈশপ্রহরী’ আকাশ দীপের কথা। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম হাফসেঞ্চুরি করলেন বাংলার এই পেসার। হাফসেঞ্চুরির পর তাঁকে বাহবা দিল গোটা স্টেডিয়াম। টিম ইন্ডিয়ার ড্রেসিংরুমেও উচ্ছ্বাস চোখে পড়ল। স্কোর বোর্ডে মহাগুরুত্বপূর্ণ ৬৬ রান যোগ করে তিনি ফিরলেন জেমি ওভারটনের বাউন্সার সামলাতে না পেরে। টেস্টে ভারতীয় নাইট ওয়াচম্যানের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করলেন আকাশ। এই টেস্টে যদি ভারত জেতে, তাহলে অবশ্যই ‘গেমচেঞ্জার’ হবেন আকাশ দীপ।
অন্যদিকে যশস্বী অনড়-অটল। লাঞ্চের আগে তিনি ৮৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। কঠিন পিচে ধৈর্য ও অধ্যবসায় কাজে লাগিয়ে ১২৭ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। এটাও ঠিক যে, ক্যাচ পড়ে জীবনদান পান তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এটা তাঁর চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি। কেরিয়ারে ষষ্ঠ। যশস্বীর ইনিংস দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন তাঁর পরিবারও। মা-বাবার সামনে সেঞ্চুরির কৃতিত্ব গড়ার সুযোগ ছাড়লেন না ২৩ বছর বয়সি ব্যাটার। সেঞ্চুরির উপর ড্রেসিংরুমের দিকে উড়ন্ত চুম্বনও ছুড়ে দিলেন। পায়ের পেশিতে সামান্য টান ধরেছিল ঠিকই, তবে তাতে হাল ছাড়ার ক্রিকেটার নন যশস্বী। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হন ১১৮ রানে।
তবে রান পাননি শুভমান গিল। ১১ রানে আউট হন ভারত অধিনায়ক। করুণ নায়ার (১৭) প্রথম ইনিংসের মতো মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে পারলেন না। শুরুতেই বাউন্সারে তাঁর হাতে যে চোট লেগেছিল, তা বাকি ইনিংসে ভোগাল। ধ্রুব জুরেল শুরুটা খারাপ করেননি। ৩৪ রান করে আউট হন তিনি। এবার সম্ভবত তাঁর বড় রান করার কথা ভাবা উচিত। কিন্তু যাঁকে নিয়ে কোনও দুশ্চিন্তার জায়গা নেই তিনি হলেন রবীন্দ্র জাদেজা। লর্ডসে জয় এনে দিতে পারেননি, তবে ম্যাঞ্চেস্টারে সেঞ্চুরি করে ড্র করিয়েছিলেন। এদিন করে যান ৫৪ রান। শেষবেলায় হাত খুললেন ওয়াশিংটন সুন্দর। হার-ছক্কার বন্যায় কার্যত নাস্তানাবুদ করে দেন ইংল্যান্ডের বোলিংকে। তিনি ৪৬ বলে ৫৩ করে আউট হন। ওকসের অভাব ভালোই ভোগাল ইংল্যান্ড। গাস অ্যাটকিনসন বা ব্রাইডন কার্সরা যেভাবে বোলিং শুরু করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ভারত অল আউট হয় ৩৯৬ রানে। লক্ষ্য ৩৭৪ রানে। হাতে দুদিনের বেশি সময়। ওভালে সর্বোচ্চ ২৬৩ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে। ফলে অসাধ্যসাধনের আশা ছাড়া আপাতত ইংল্যান্ডের জন্য আর কিছু নেই।