সম্যক খান, মেদিনীপুর: সিদ্ধান্ত না পসন্দ! তাই খেলা চলাকালীনই মাঠে ঢুকে রেফারিকে লাথি তৃণমূল নেতার ভাইপোর। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিও। আর এরপরেই অভিযুক্ত রাজা খানকে গ্রেপ্তার করেছে মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ধৃত রাজা নিজেও এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা বলে দাবি বিজেপির। ইতিমধ্যে এই ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও অভিযুক্ত রাজা খান তৃণমূলের কেউ নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা।
স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের ওল্ড প্রদীপ সংঘের মাঠে একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় একাধিক ফুটবল দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। জানা যায়, ধৃত রাজা খানের একটি দলও ওই ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। খেলা চলাকালীন একটি গোলকে কেন্দ্র করে বচসার সূত্রপাত। ওই ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মণ মাণ্ডি। তিনি খড়গপুর সাব ডিভিশন রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। পাশাপাশি ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষকও। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, খেলা চলাকালীন অভিযুক্ত রাজা মাঠে ঢুকে রেফারির দিকে ধেয়ে যাচ্ছেন। একেবারে আঙুল উঁচিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন। যদিও অনেকেই রাজাকে আটকানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। এর মধ্যেই হঠাৎ রেফারির পেটে সজোরে লাথি মারেন।
আর সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। আর সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে শাসকদল তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনার সঙ্গে একদিকে বাংলার নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনেছেন, অন্যদিকে তফসিলি তোপও দেগেছেন। বিরোধী দলনেতা লিখছেন, ”পুলিশ প্রশাসনের প্রশ্রয়ে হৃষ্টপুষ্ট বলিষ্ঠ তৃণমূলী সমাজবিরোধী গুণ্ডাদের কীর্তি দেখুন। খেলার মাঠের বিতর্কে রেফারি কে সর্বসমক্ষে লাথি মারছে মেদিনীপুর পৌরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান সৌমেন খানের ভাইপো রাজা খান।”
ফুটবল মাঠে ফুটবলের বদলে রেফারি কে লাথি !!!
পুলিশ প্রশাসনের প্রশ্রয়ে হৃষ্টপুষ্ট বলিষ্ঠ তৃণমূলী সমাজবিরোধী গুণ্ডাদের কীর্তি দেখুন। খেলার মাঠের বিতর্কে রেফারি কে সর্বসমক্ষে লাথি মারছে মেদিনীপুর পৌরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান সৌমেন খানের ভাইপো রাজা খান।
যাকে মারছে তিনি হলেন শ্রী… pic.twitter.com/9DZunShyBh
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) August 16, 2025
এই প্রসঙ্গে তাঁর আরও দাবি, ”আমি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার কে অনুরোধ করব তপশিলী জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন, ১৯৮৯ ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার উপযুক্ত ধারা অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে, নচেৎ শ্রী লক্ষণ মান্ডিকে সুবিচার পাওয়াতে ওনাকে সব রকম সহায়তা করবো।” ওই ম্যাচের সঙ্গে নির্বাচনের তুলনা টেনে শুভেন্দুর দাবি, ”তৃণমূলের সংস্কৃতি হলো রেফারিকে কুরুচিকর আক্রমণ শানানো। তা ভোটের ময়দানের ক্ষেত্রে রেফারির ভূমিকায় থাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণই হোক অথবা স্থানীয় ফুটবল প্রতিযোগিতার ময়দানে এই পুঁচকে-পাঁচকা তৃণমূলী রাজা খান হোক।”
যদিও ধৃতের তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূল মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার। তিনি জানিয়েছেন, ”রাজা খানের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। সে দলের কেউ নয়। কোনও দিন মিটিং মিছিলেও দেখা যায়নি।’ তৃণমূল নেতার দাবি, ”ঘটনা নিন্দনীয়। খেলায় রেফারির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। তাঁর গায়ে হাত তোলা, লাথি মারা নিন্দনীয় ঘটনা। আইন মেনে প্রশাসন এর ব্যবস্থা নেবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন